তাহিরপুরে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা
তাহিরপুর সংবাদদাতাঃ সুনামগঞ্জের জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি জাবির আহমেদ জাবেদ ও উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামের পল্লী চিকিৎসক বশির মিয়ার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ সভাপতি জাবের আহমেদ জাবেদ (৩৫), তার সহোদর সোহেল আহমদ (২৫), রতনপুর গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে মনসুর মিয়া (৩২), রঙ্গারছড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফারুক মিয়া (৩০), রতনপুর গ্রামের মস্তু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩১), তার সহোদর লিটন মিয়া (২৫) ও কলাগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে, শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সেলিম ইকবাল ভূইয়া (৩০)।
রবিবার রাতে চাঁদাবাজি মামলাটি দায়ের করেন, উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বীরেন্দ্রনগর – রঙ্গারছড়া গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে পাথর কয়লা শ্রমিক আব্দুল কুদ্দুছ। মামলার বাদী অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত মৌসুমে অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙ্গে বোরো ফসলহানির পর এলাকার কয়েক’শ হতদরিদ্র পরিবারের নারী পুরুষ- জীবন জীবিকার তাগিদে বাগলী ছড়া নদী ও অন্যান্য পাহাড়ি ছড়ার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাথর উক্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। মামলার প্রধান আসামী জাবের আহমেদ জাবেদ ও সেলিম ইকবাল ভূইয়াসহ অন্যান্য অভিযুক্ত আসামীরা কয়েকটি মোটরসাইলে নিয়ে সংঘবদ্ধ মহড়া দিয়ে পাথর উক্তোলনকারী শ্রমিকদের নিকট পাথর উক্তোলনের জন্য প্রতিদিন তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দেয়ার জন্য নানা ভাবে চাঁপ সৃষ্টি করে। চাঁদা না দিলে শ্রমিকদের পাথর উক্তোলন বন্ধ করে দিবে বলে তাদেরকে মামলা – হামলায় হয়রানীরও হুমকি দেয়া হয়।
বাগলী গ্রামের শ্রমিক জিয়াউর (৩৭) ও নারী শ্রমিক রতন বালা (৪৬) বললেন, কয়েক মাস ধরেই জাবের – সেলিম প্রতি ট্রলি পাথরের জন্য ১শ টাকা করে চাঁদাদাবি করে আসছে, প্রতিদিন শ্রমিকরা তাদেরকে ১০ হাজার করে চাঁদা দেয়ার জন্য হুমকি দিয়া গেছে। শ্রমিকরা আরও জানান, তার গরীব মানুষ এক ট্রলি পাথর সারাদিন তুলে ২৫০শ থেকে ৩শ টাকা বিক্রি করে কোনরকম সংসার চালায়। তাদের কে চাঁদার টাকা দিবো কোথায় থেকে। চাঁদার টাকা দিতে পারিনা বলে আজ কয়েকদিন ধরে কয়লা ও পাথর তোলা বন্ধ রয়েছে। উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সেলিম ইকবাল ভূইয়া ও জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ সভাপতি জাবির আহমেদ জাবেদ জানান, তাদের ওয়ার্ড সভাপতির উপর হামলা হয়েছে বলে বিষয়টি মিমাংশার জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। যাওয়ার পর পরই স্থানীয় কিছু লোকজন তাদের একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। রাজনৈতিক ভাবে হয়রানী করতেই এ ধরণের একটি মিথ্যা মামলা তাদের ওপর দেয়া হয়েছে। তাহিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার মামলা দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশী চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।