হাওরের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ
হাওরের পানি বিলম্বে নামায় শঙ্কিত কৃষকদের বোরো সহায়তায় পানি নিষ্কাশনের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া। এছাড়া জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলামও তাঁর বক্তব্যে একই কথা জানিয়েছেন। আলোচনাস ভায় তারা জানান, হাওরাঞ্চলের নদ-নদী ভরাট হওয়ায় এখন হাওর ও নদীর পানির লেভেল সমান হয়ে গেছে। যে কারণে পানি বিলম্বে নামছে। তাছাড়া কয়েকটি হাওরে বেড়িবাঁধ ও অপ্রয়োজনীয় স্লুইসগেটের কারণেও পানি বিলম্বে নামছে বলে তারা জানান। এই অবস্থায় কৃষকদের সহায়তায় পানি নিষ্কাশনের জন্য তাৎক্ষণিক এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে তারা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সার্কিট হাউসে ‘বন্যা পরবর্তী হাওররক্ষা বাঁধ মেরামত ও সংরক্ষণ বিষয়ে আলোচনা সভায়’ সুধীজনকে বিষয়টি অবগত করেন।
হাওরের নদীগুলোকে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় আনা হবে
পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল হক মাহমুদ বলেছেন, হাওরে এত বড় দুর্যোগের পরও এখানকার মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। না খেয়ে মারা যাওয়ার মত অবস্থা তৈরি হয়নি। সরকার হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ভিজিএফ, ভিজিডিসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের সাহায্য করছে। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুপুরে হালির হাওর, শনির হাওর, সোনামড়ল হাওরের ভেসে উঠা বাঁধ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, হাওরের সব নদীগুলোকে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় আনা হবে। তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সিলেট অঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই নদী খননের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। খনন কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। আগামী বোরো মৌসুমে হাওরের বাঁধের জন্য যত টাকা প্রয়োজন সরকার তা দেবে। টাকা দিতে সরকারের কোন সমস্যা নেই। সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে হাওরের বাঁধ নির্মাণ করতে চায়। দ্রুততম সময়ে যাতে বাঁধের কাজ শেষ হয় সেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বোরো আবাদ ছাড়াও হাওরের মানুষ বিকল্প কি কি কাজ করতে পারে সে নিয়ে ভাবছে সরকার।
তিনি আরো বলেন, বাঁধের কাজগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যেই শেষ করতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হাওরের ফসল রক্ষায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না। তিনি আরো বলেন, হাওরের নতুন নতুন ধানের বীজসহ সবজি চাষের জন্য নতুনভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। হাওর এলাকার জমিতে ধান চাষ আরেকটু কম সময় নিয়ে করা যায় কিনা সেই ভেরাইটি গুণ বের করতে হবে এবং সবজি চাষের উপর আরো জোর দেয়া যায় কিনা, আরো কম সময়ে শাক সবজি করা যায় কিনা চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। চলতি বছরে হাওর ও নদীর পানি দেরিতে নামার কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বন্যায় হাওর এলাকার নদীগুলোতে বেশি পরিমাণ পলিমাটি পড়েছে। অনেকে বলেছেন হাওরের মধ্যে পানি আটকে আছে কিন্তু হাওরে পানি আটকানো হয়নি। হাওর ও নদীর পানি এক লেভেলে রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে আমাদের মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান প্রমুখ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রী সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় করেন।