ইতালী নাগরিক হত্যার দায়ে লন্ডনে বাঙ্গালি তরুণীর যাবজ্জীবন
লন্ডন : লন্ডনে ইতালিয়ান নাগরিকে হত্যার দায়ে হাসনা বেগম নামে এক বাঙ্গালি তরুণীকে যাবজ্জীবন জেলদণ্ড দিয়েছে ইনার লন্ডন ক্রাউন কোর্ট। ২৫ বছর বয়সী হাসনা ইস্ট লন্ডনের ই-ফোরটিন এলাকার বাইং স্ট্রিটের বাসিন্দা। ২৩ বছর বয়সী ইতালিয়ান নাগরিক পেট্রিও সান্নাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে হাসনা বেগমের সাজার মেয়াদও ঘোষণা করেন আদালত। তাকে অন্তত ২০ বছর জেলের অভ্যন্তরে কাটাতে হবে। আদালত জানিয়েছে- এবছরের ২৬জুন ইস্ট লন্ডনের কেনিংটাউন এলাকার রেভেনস্ক্রফ্ট ক্লসে নিজের বেডরুম থেকে ছুরিকাহত পেট্রিওকে উদ্ধার করে লন্ডন পুলিশ। ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে ২৭শে জুন হাসনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। ২৮ জুন লন্ডনের একটি হাসপাতালে পেট্রিও’র ময়নাতদন্ত সমপন্ন হয়, উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। হাসনা বেগম পুলিশকে জানিয়েছেন, নিহত পেট্রিও’র সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। গত ২৩শে জুন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রেভেনস্ক্রফ্ট ক্লজে গিয়েছিলেন। তখন তার মাথায় পরচুলা লাগানো ছিল। হাসনা বেগম সেখানে বিভিন্ন বাসায় তল্লাশির পর পেট্রিও’র দেখা পান। এ সময় বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি তার ওপর হামলা করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশকে হাসনা বেগম আরো জানিয়েছেন- ঘটনার সময় পেট্রিও তার উপর ভয়ঙ্করভাবে আক্রমনাত্মক ছিল। ফলে আত্মরক্ষার জন্যে তিনি পেট্রিও’র উপর পাল্টা হামলা করেন। এই ঘটনার পর হাসনা বেগম স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও পুলিশ প্রমাণ পেয়েছে। তিনি হাতে আঘাত পেয়েছিলেন।
পেট্রিও’র উপর হামলার পর তার মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে আসেন হাসনা। সঙ্গে থাকা পেট্রিও’র মোবাইলে তিনি নিজে অন্তত ৬ বার কল দিয়েছেন। পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে- পেট্রিও’র উপর হামলার অন্তত ৩ দিন পর একটি গোপন নাম্বার থেকে তার ভাইকে কল করেন হাসনা বেগম। টেলিফোন করে পেট্রিও’র ঘরে গিয়ে খবর নিতে তার ছোটভাইকে তিনি অনুরোধ করেন। তখন পেট্রিও’র ভাই কাজে ছিলেন। পরবর্তীতে পেট্রিও’র ঘরে গিয়ে তিনি তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এছাড়াও পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে- পেট্রিও হত্যার কয়েকদিন আগে হাসনা বেগম একটি নকল ইনস্ট্রুগ্রাম একাউন্ট খুলেন। এই একাউন্ট দিয়ে তিনি ইনস্ট্রুগ্রামে পেট্রিও’কে অনুসরণ করতেন এবং কোন মহিলা যদি তার সঙ্গে ডেটিং করত সেই মহিলাকেও হুমকি দিতেন। তবে পেট্রিও এবং হাসনা বেগমের মধ্যে কিভাবে সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে বা সেই সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু ছিল সে বিষয়ে বিশেষ কিছু উল্লেখ করা হয়নি। ৪ফুট ১১ ইন্ছি লম্বা হাসনা বেগম পেট্রিও হত্যার আগে কোন দিন পুলিশে গ্রেফতার হননি বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিনি একটি দোকানে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পেট্রিও হত্যার দায়ে তাকে অন্তত ২০ বছর জেলখাটতে হবে।