শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা খালেদা জিয়ার
বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়া আজ বৃহস্পতিবার শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এর আগে সকাল ৯টায় রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের বাসা থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসোধে রওনা দেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আর জ্যেষ্ঠ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশকে মেধা মননে পঙ্গু করার হীন উদ্দেশে চূড়ান্ত বিজয়ের ঊষালগ্নে হানাদার বাহিনীর দোসররা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের প্রথিতযশা শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক বিজ্ঞানীসহ বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর একে একে মন্ত্রীসভার সদস্য,বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শহীদ পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। ওয়ান প্ল্যানেট সামিটে যোগ দিতে গত সোমবার প্যারিসে যান শেখ হাসিনা। তিন দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে দেশে ফিরবেন তিনি। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। হানাদাররা সে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যার মাধ্যমে শুরু করে বাঙালি নিধনযজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস হানাদাররা বাংলাদেশে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রাখে।
ডিসেম্বরে এসে নিজেদের পরাজয় অনিবার্য জেনে দখলদাররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার গোপন নীলনকশা গ্রহণ করে। এর পর বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরি করে তা তুলে দেয় তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ক্যাডার গ্রুপ আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীর হাতে। ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই হিটলিস্ট অনুযায়ী পাকবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘৃণ্যতম অপকর্মে এ তিনটি ঘাতক গ্রুপ মেতে ওঠে। অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দুদিন আগে সারা দেশ থেকে সহস্রাধিক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে তারা। বিভিন্ন দলের কর্মসূচি: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর মিত্র জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্য সংগঠনগুলো পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি, সিপিবিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এ ছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ, চিত্রপ্রদর্শনীসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ বেতার, বিটিভি, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও এফএম রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। জাতীয় দৈনিকগুলোতেও বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ: সূর্যোদয়ের ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল সোয়া ৭টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হয়েছে। পৌনে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। সাড়ে ৮টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
জাতীয় পার্টি: সকাল ৭টায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।