প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মমতাকে বসানোর পরিকল্পনা মোদীর
তিস্তা চুক্তির জট ছাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরিকল্পনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিস্তা চুক্তির প্রত্যাশার চাপ নিয়েই আগামী ৭ এপ্রিল ভারত সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময়ই তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মমতার আপত্তির কারণে তা আটকে যায়। এরপর ভারতে ক্ষমতার পালাবদলের পর বিজেপি নেতা মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ২০১৫ সালে ঢাকা সফরে এলেও সেই জট খোলেনি। তিস্তা চুক্তি না হওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের আপত্তিকে বাধা হিসেবে দেখিয়ে আসছে। এনিয়ে বিজেপিবিরোধী নেত্রী মমতার সঙ্গে তাদের কোনো আলোচনাই ফলপ্রসূ হয়নি।
এবারের সফরে শেখ হাসিনা বিরল সম্মান নিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আমন্ত্রণে নয়া দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে থাকবেন। সেখানেই শেখ হাসিনা ও মমতাকে একসঙ্গে বসানোর পরিকল্পনা চলছে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে উঠে আসা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জ্ঞানের উপর মোদীর বেশ ভরসা রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে যেমন তেমনি মমতার সঙ্গেও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আর সেটাই কাজে লাগাতে চান নরেন্দ্র মোদী। তবে এটা এখনও স্পষ্ট নয়, রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের আমন্ত্রণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে কি না কিংবা দেওয়া হলেও তাতে তার সাড়া মিলেছে কি না? বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, আমন্ত্রণ পেলে অবশ্যই তাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে যাবেন।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে তিস্তা চুক্তির পরিকল্পনার আগে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেনি।যদি আমাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়, আমাদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে আমরা কেন আলোচনায় যাব না? মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরও আন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে। ছয় বছর আগে শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে গেলে তার সঙ্গে বৈঠকে তাকে ‘দিদি’ বলে ডেকেছিলেন মমতা। শেখ হাসিনার সফরের সময় বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীকেও একসাথ করার পরিকল্পনা রয়েছে মোদীর, যাতে মমতার উপর চাপ দেওয়া যায়। সাম্প্রতিক রাজ্য নির্বাচনে বিজেপির অবস্থান আরও মজবুত হলেও মোদী রাজ্য সরকারগুলোর সায় নিয়েই তিস্তার মতো সমস্যাগুলো সমাধানে পক্ষপাতি বলে জানান বিজেপির এক নেতা। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে মমতাকে সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।