ফেসবুকে যে শব্দটি ভুলেও টাইপ করবেন না
ফেসবুকে এমন পোস্ট আপনারা সকলেই দেখেছেন, যেখানে কোনও এক অসুস্থ শিশুর ছবি দেওয়া রয়েছে, আর ছবির উপরে লেখা রয়েছে ‘এই ছবি কেউ এড়িয়ে যাবেন না, সবাই লাইক করুন, আর কমেন্টবক্সে লিখুন ‘আমিন’। সেই দেখে আপনিও কমেন্টবক্সে ‘আমিন’ লিখে দিয়েছেন, কখনও বা একেবারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই অসুস্থ শিশুর কল্যাণ কামনার্থে টাইপ করেছেন ‘আমিন’। কোনও প্রার্থনার শেষে প্রার্থনাটির সমর্থনসূচক শব্দ হিসেবে ‘আমিন’ উচ্চারণ করা রীতি। সেই রীতি মেনেই আপনিও ফেসবুকে এই শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এই একটি শব্দ ব্যবহারের ফলেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দুষ্কৃতিকারীদের হাতে চলে যাচ্ছে বলে দাবি করছে বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর সাইট।
‘অনলাইন থ্রেট অ্যালার্টস’-এর মতো বেশ কিছু ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, অসুস্থ শিশুদের ছবি দেওয়া এই সমস্ত পোস্টের পেছনে লুকিয়ে থাকে হ্যাকারদের কারসাজি। আপনি যখনই এই জাতীয় পোস্টের কমেন্ট বক্সে ‘আমিন’ লেখেন, তখনই বিশেষ এক প্রযুক্তির সাহায্যে আপনার বাসস্থানের ঠিকানা, জন্মতারিখ, কর্মক্ষেত্র, ইমেল আইডি- প্রভৃতি ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয় তারা। পরিণামে আপনার পরিচয় ব্যবহার করে কোনও রকমের জালিয়াতি বা দুষ্কর্ম করার সুযোগ তারা পেয়ে যায়। এমনকী উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে তারা আপনার ইমেল অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত হ্যাক করতে পারে, কিংবা টাকা হাতিয়ে নিতে পারে অনলাইন ব্যাঙ্কিং-এর সঙ্গে যুক্ত আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে।
অবশ্য ‘হোক্স-স্লেয়ার’-এর মতো সাইটের সঙ্গে যুক্ত প্রযুক্তিবিদরা এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, নির্দিষ্ট একটি শব্দ টাইপ করলেই হ্যাকাররা কোনও ফেসবুক ইউজারের সমস্ত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারবে- এমন দাবি ঠিক নয়। তবে এটা সত্যি যে, অসুস্থ বাচ্চার ছবি দিয়ে লাইক বা কমেন্ট দাবি করা এই সমস্ত ফেসবুক পোস্টকে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ অধিকাংশ সময়েই অন্য ওয়েবসাইট থেকে ছবি চুরি করে এই সমস্ত পোস্টগুলি বানানো হয়। যে শিশুর ছবি দিয়ে পোস্ট বানানো হচ্ছে, তার বা তার পরিবারের সঙ্গে যারা পোস্টটি বানাচ্ছে তাদের কোনও যোগই থাকে না। ফলে ‘আপনার একটি লাইকের বিনিময়ে অসুস্থ শিশুটির পরিবার তার চিকিৎসার জন্য পাবে ১ ডলার অনুদান’ এই ধরণের বার্তার কোনও সত্যতা নেই। বরং আপনার লাইক বা কমেন্টের বিনিময়ে, পোস্ট প্রদানকারী গ্রুপটির অর্থ রোজগারের পথ খুলে যায়। কাজেই ফেসবুকে এ বার থেকে এই ধরনের পোস্ট দেখলে সেগুলিকে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।