সড়ক দূর্ঘটনায় এক এলাকার ৫ মুসল্লি নিহত
কাঠইড় ইউনিয়নের ইজতেমা ফেরত ৪ মুসল্লি নিহত হওয়ার ঘটনায় ইউনিয়ন জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সোমবার সোয়া ২ টায় নিহতদের লাশ এলাকায় পৌঁছালে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের স্বজনসহ ইউনিয়নবাসী। বিকাল সাড়ে ৪ টায় ইউনিয়নের গোলেরগাঁও মাঠে ৪ জনের একসঙ্গে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নিজ নিজ গ্রামের গুরস্থানে নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার রশিদপুর সাতমাইল এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে একটি ট্রাকের সঙ্গে ইজতেমা ফেরত একটি বাসের সংঘর্ষে কাঠইড় ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন নয়জন। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশংকাজনক। এদিকে সকালে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আস্তমায় বাস থেকে নেমে সড়ক পাড়াপাড়ের সময় সুরুজ মিয়া (৬০) নামের আরেক ইজতেমা ফেরত যাত্রী বাসের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন। তিনি আস্তমা গ্রামের বাসিন্দা।
সিলেটের রশিদপুরের দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আবু বক্কর (৫০), তিনি নোয়াগাঁও গ্রামের তাবলিগ জমাতের আমীর। ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক তিনি। গোলেরগাঁও গ্রামের আকবর আলী (৫০), ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক তিনি। কাঠইর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উলুতুলু গ্রামের আব্দুল খালিক (৫০), ৪ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক তিনি এবং কলাইয়া গ্রামের আব্দুল জহুর (৫০), তিনি ২ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। তাবলিগ জমাতের এই কাফেলায় ৪৮ জন ইজতেমা ফেরত যাত্রী ছিলেন। নোয়াগাঁও গ্রামের মিরাস আলীও (৫৫) এই কাফেলায় ছিলেন। সামান্য কিছু আহত হয়েছেন তিনিও। মিরাস আলী জানালেন দুর্ঘটনার সময় চালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তারা বাধা দিলেও চালক মানেননি। প্রচ- কুয়াশার মধ্যে এক পর্যায়ে তাদের বহনকারী গাড়িটি একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, যাত্রীদের সকলেই কিছু কিছু আহত হয়েছেন। ইজতেমা ফেরত এই যাত্রী জানান, ঘটনাস্থলেই তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে নেবার পর ইউপি সদস্য আব্দুল খালিক নিহত হন। দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে নোয়াগাঁও গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া (৩৫) ও আব্দুল মজিদ (৪৫)’এর অবস্থা আশংকাজনক। এই দুজনকেই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নোয়াগাঁও গ্রামের নুরুল আমিন বলেন,‘নিহত ৪ জনেই এলাকায় সামাজিক, ধর্মপ্রাণ এবং ন্যায় পরায়ণ হওয়ায় মানুষ তাদের মৃত্যুতে হায় আপসোস করছেন, নিহতদের বাড়িতে এসে ভিড় করেছে তাঁদেরকে শেষবারের মতো দেখা করার জন্য।’ নিহত আবু বক্করের ভাই মুক্তিযোদ্ধা হারুন মিয়া বললেন,‘পরিবারের কেউ এমন নির্মম মৃত্যু সইতে পারছে না। চালকের নির্মমতাও এজন্য দায়ী।’ দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আস্তমায় নিহত সুরুজ মিয়া (৬৫)কে সকাল ৮ টায় বাস থেকে নেমে সড়ক পাড়াপাড়ের সময় জেবি পরিবহন নামের একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এসময় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। দুর্ঘটনা কবলিত বাস আটক করেছে পুলিশ।