ছাতক:: ছাতক সিমেন্ট কারখানার দু’টি পুরাতন পাওয়ারপ্লান্ট বিক্রির লক্ষে কারখানা কর্তৃক প্রদেয় টেন্ডারে অনিয়মের বিষয় তদন্ত করেছেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) সাবেরা আক্তারসহ ৫ সদস্যের একটি তদন্ত টিম।  সোমবার কারখানায় এমডির কার্যালয়ে এ তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। তদন্ত টিমে ছিলেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান, সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার অখিল কুমার সাহা, সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক প্রকৌশলী সেলিম মিয়া ও সুনামগঞ্জ জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক নুরুর রব।  এসময় কারখানার এমডি নেপাল কৃষ্ণ হাওলাদার, কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির, বানিজ্যিক ব্যবস্থাপক আব্দুল বারী, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, এমপিআইসির প্রধান নার্গিস মোমেনাসহ কারখানার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, কারখানার পুরাতন ২.৪ ও ৪.৫ মেগাওয়াটের দু’টি অকেজো পাওয়ার প্লান্ট বিক্রয়ের নিমিত্তে ৩টি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কারখানা কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহবান করে। গত বছরের ৩১ অক্টোবর টেন্ডারের সিডিউল ক্রয় ও ১ নভেম্বর দুপুর ১২ টা পর্যন্ত দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে ২০টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের দরপত্র জমা দিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবী করেছেন।  এর মধ্যে ২ কোটি ৫১লাখ টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে চট্টগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ কাজটি হাতিয়ে নেয়।  কিন্তু স্থানীয় ঠিকাদাররা ওই দিন অভিযোগ তুলেছিলেন, তারা সিডিউল জমা দিতে এসে কারখানা গেটে সিকিউরিটির বাঁধার সম্মুখিন হয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপস্থিত হওয়া সত্বেও সিকিউরিটির বাঁধার কারনে তারা সিডিউল জমা দিতে পারেনি।
এ পরিস্থিতিতে তারা কারখানার এমডি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ, ছাতক থানায় জিডি করেছিলেন। এসময় রিটেন্ডারের দাবীতে কারখানা গেটে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিল করেছিল ঠিকাদাররা।  এসব বিষয় নিয়ে সংবাদ আকারে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে শিল্প মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে সোমবার বিষয়টির তদন্ত করেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (রাজস্ব) সাবেরা আক্তারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত টিম।  তদন্ত টিমের জিজ্ঞাসাবাদে ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান ঠিকাদারদের জিডির বিষয়টি স্বীকার করেন। ওইদিন ঠিকাদারদের দেয়া লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেন কারখানার এমডি নেপাল কৃষ্ণ হাওলাদার।  কারখানা এমপিআইসির প্রধান নার্গিস মোমেনা তদন্ত টিমের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ঘটনার দিন প্রায় সাড়ে এগারো টায় দু’জন ব্যবসায়ী চাপ সৃষ্টি করে তার কাছ থেকে টেন্ডার বক্সের চাবি নিতে এসেছিল। এ নিয়ে তাদের সাথে এ কর্মকর্তার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন আইনী প্রক্রিয়ায় যায়নি বলে তদন্ত টিমকে জানান।  এদিকে কারখানার জেনারেল অফিস সংলগ্ন গেটে ঠিকাদারদের বাঁধা, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটলেও টাইম অফিস গেটে সিসি ক্যামেরায় ধারনকৃত ওইদিনের ফুটেজ দেখানো হয় তদন্তটিমকে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn