ফেসবুক ভুয়া খবর ঠেকাতে পারবে?
সম্প্রতি ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্মে ভুয়া খবর ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে খবরের কোন কোন সূত্রকে ব্যবহারকারীরা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করেন, সে বিষয়ে জরিপ চালানোর পরিকল্পনা করেছে ফেসবুক। জরিপের মাধ্যমে খবরের ভুয়া উৎসকে শনাক্ত করে তা বন্ধ করাই ফেসবুকের লক্ষ্য। তবে এ পরিকল্পনার কতটুকু কার্যকর হবে, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গত শুক্রবার রাতে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ ব্যক্তিগত পেজে এক পোস্টে বলেন, ফেসবুকে শেয়ার হওয়া সংবাদগুলো মানসম্পন্ন ও বিশ্বস্ত সূত্রের হবে, এটা নিশ্চিত করতে চান। জাকারবার্গ বলেন, ‘বিশ্বে বর্তমানে উত্তেজনাপূর্ণ, ভুয়া এবং একমুখী খবরের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষকে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় তথ্যকে দ্রুততার সঙ্গে ছড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা যদি সুনির্দিষ্টভাবে এ সমস্যা মোকাবিলা করতে না পারি, তবে ভুল তথ্য ছড়ানোর মাত্রা আরও বেড়ে যাবে।’ জাকারবার্গের পরিকল্পনা হলো এই প্ল্যাটফর্মে ভুল তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের কাছেই বিশেষ কোনো খবরের সূত্র বিশ্বাসযোগ্য কি না, তা জানতে চাওয়া। ফেসবুকের আশা, এভাবে তারা ভুল তথ্য ঠেকাতে সক্ষম হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা এ পরিকল্পনার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক ল্যারি মজিদ আল জাজিরাকে বলেন, এ পরিকল্পনা সফল না হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, অনেক ব্যবহারকারী ভুয়া খবরের উৎসগুলোকেই পছন্দ করেন, নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেন। কাজেই এমন জরিপের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য খবরের উৎস শনাক্ত করা সম্ভব নয়। দ্য নেক্সট ওয়েবের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রধান ম্যাট নাভারা টুইট বার্তায় বলেন, ‘ফেসবুক ঘোষণা দিয়েছে যে খবরের কোন মাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্য, তা তারা ব্যবহারকারীদের কাছেই জানতে চাইবে। কিন্তু যে ব্যবহারকারীরা ভুয়া খবর শনাক্ত করতেই সক্ষম নন এবং যে ব্যবহারকারীরা ইতিমধ্যে ভুয়া খবরই ব্যাপকভাবে শেয়ার করেছেন—তাঁদের ওপর জরিপ চালিয়ে নির্ভরযোগ্য খবরের উৎস শনাক্ত করা কতটা সম্ভব হবে?’ যদিও সব বিশ্লেষকই যে ফেসবুকের এই পরিকল্পনার সমালোচক, তা নয়। ডেটা ফর ডেমোক্রেসির রিনি ডিরেস্তা টুইট বার্তায় বলেন, ‘ফেসবুকের সিদ্ধান্তটি ভালো খবর। মানের বিষয়ে গুগল দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। তবে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর কতটা সময় লাগবে, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।’