চালক খুনে বাবা-ছেলেসহ ৭ জনের কারাদণ্ড
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ইজিবাইকচালক আবদুল হামিদ হত্যার দায়ে বাবা-ছেলেসহ সাতজনকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার সকালে গাজীপুরের দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক ওই রায় দিয়েছেন। দণ্ডিত ব্যক্তিদের মধ্যে গাজীপুরের কালীগঞ্জের বড়নগর গ্রামের মো. আঙ্গুর খানের ছেলে মো. মাসুমকে (২৮) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মাসুমসহ তাঁর বাবা আঙ্গুর খান (৫০), বড় ভাই সুমন (২৫) ও ছোট ভাই মো. রজন (২২) এবং একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মজিবুর রহমান ওরফে মজিব ওরফে মজিবুল হক (২৪), আকবর আলী (৫৪) ও তাঁর ছেলে মো. হৃদয়কে (২০) পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গাজীপুর আদালতের পিপি হারিছ উদ্দিন আহম্মদ মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০১৫ সালের ৮ মার্চ সকালের দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার চান্দাইয়া গ্রামের একটি রাস্তার পাশে স্থানীয় বড়নগর এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমানের ছেলে ইজিবাইকচালক (ব্যাটারিচালিত) আবদুল হামিদ অটোরিকশা চালানোর সময় পেছন দিকে আসামি আঙ্গুর খানের অটোরিকশাটি ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে হামিদ ও আঙ্গুরের মধ্যে বিবাদ ও মারামারি হয় এবং আঙ্গুর হামিদকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে চলে যান। এ ঘটনার পরে হামিদ কয়েকজনকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আঙ্গুরের বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে আঙ্গুর তাঁর লোকজন নিয়ে রড, লাঠিসোঁটাসহ হামিদের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে মাসুম পেছন থেকে লোহার হ্যামার দিয়ে হামিদের মাথার পেছনে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেন এবং হামিদের কাছে থাকা টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে তাঁরা চলে যান। পরে এলাকাবাসী হামিদকে উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অবস্থার অবনতি হলে তাঁরা ধানমন্ডি জেনারেল ও কিডনি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ মার্চ রাত আটটার দিকে হামিদ মারা যান। এ ঘটনায় পরদিন তাঁর স্ত্রী আউলিয়া বেগম বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে এসআই তরিকুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্তের পর সাতজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে আদালত ১১ জনের সাক্ষ্য শেষে আজ সোমবার রায় দেন। এ সময় আসআমিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. হুমায়ুন কবির ও মো. কাউসার সিকদার।