জগন্নাথপুরে বেড়িবাঁধের অনিয়মে পিআইসি সভাপতিকে শোকজ
জগন্নাথপুর :: জগন্নাথপুরে হাওড় রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও গাফিলাতি পরিলক্ষিত হওয়ায় ৪৫ পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) সভাপতিকে শোকজ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এদেরকে শোকজ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী সময় মত সঠিক উচ্চতায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে ব্যর্থ হওয়া ও কাজে গাফিলতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের শোকজ করেন। প্রথম দিকে প্রাক্কলন তৈরী ও ওয়ার্ক অর্ডার দিতে বিলম্ব করায় যথাসময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। কাজে গাফিলাতির কারণে পাউবো জগন্নাথপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়জুল্লাকে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়। এর পর নবাগত কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দেন নাসির উদ্দিন। এরপর উপজেলা কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহর নির্দেশনায় দ্রুত প্রকল্প তৈরী করে কার্যাদেশ প্রদানর করেন পাউবো জগন্নাথপুর আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন। কিন্তু পিআইসি কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের গাফিলাতির কারণে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ হচ্ছে না। অনেক পিআইসি বেরী বাধে নাম মাত্র মাটি ফেলে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের পায়তারা করেছে বলে স্থায়ীয় কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। পিআইসি কমিটি নিয়েও রয়েছে স্থানীয় কৃষকদের নানা অভিযোগ। বেড়িবাঁধের আশানুরুপ কাজ না হওয়ায় পিআইসি কমিটিগুলোর গাফিলতির কারণে পুলিশ নিয়ে বেড়িবাঁধে যেতে হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহকে। ইতিমধ্যে ভুরাখালী বেড়িবাঁধের পিআইসি সভাপতি জাবেদ আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং একজন চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন মেম্বারকে কাজে গাফিলতির কারণে ১ সপ্তাহের মধ্যে সঠিকভাবে কাজ সমাপ্ত না করলে গ্রেফতার করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম বিল্লাহ পাউবো জগন্নাথপুর আঞ্চলিক অফিসের ইনচার্জ নাসির উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিদিন বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজের।অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করছেন। তারা জানান, সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সঠিক উচ্চতা অনুযায়ী নির্মাণের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম বিল্লাহ বলেন, পরপর দুইবার ফসল হারিয়ে এলকার কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। গত বছর হাওরের বেড়িবাঁধের টাকা যেভাবে লুটপাট করা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। এবার যাতে বরাদ্দকৃত টাকা সদ্বব্যবহার করে সঠিক উচ্চতায় সরকারি নীতিমালা মোতাবেক বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়।, এ ব্যাপারে আমরা সবধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এবার কোন দুর্নীতি আমরা সহ্য করব না। উপযুক্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে ব্যর্থ পিআইসিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার যাদেরকে শোকজ করা হয়েছে তারা হলেন কুশিয়ারা নদীর ডানতীর বেড়িবাঁধের পিআইসি সভাপতি দুরুদ মিয়া, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর সভাপতি সুলতান আহমদ, সুরাইয়া-বিবিয়ানা পিআইসি সভাপতি বজলু মিয়া, ১০৯ নং পিআইস সভাপতি দবির মিয়া, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী সভাপতি মকলিক মিয়া, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর সভাপতি রনধির কান্তি দাস, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি শংকর দাস, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি শুব্রত দাস, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী পিআইসি সভাপতি সৈকত আলী, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি রুবেল মিয়া, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি সেলিম মিয়া, ৩৭ নং পিআইসি সভাপতি আব্দুল তাহিদ জুয়েল, ২নং পিআইসি সভাপতি যুবরাজ মিয়া, ১১৫নং পিআইসি সভাপতি নাজমুল হক, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-২ এর পিআইসি সভাপতি মুকিদ মিয়া, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি ফারুক আহমদ, ১২ নং পিআইসি সভাপতি মোঃ জুয়েল মিয়া নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি আব্দুল হাকিম, ঢাংগুয়ার হাওর পিআইসি সভাপতি ইকবাল হোসেন, ভুরাখালী পিআইসি সভাপতি জাবেদ আহমদ, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি টাকন মিয়া, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি হাফিজুর রহমান, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি মিজানুর রহমান, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি মিলন মিয়া, টাঙ্গুয়ার হাওর পিআইসি সভাপতি ছানু মিয়া, টাঙ্গুয়ার হাওর পিআইসি সভাপতি আব্দুল মজিদ, নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এর পিআইসি সভাপতি হারুন মিয়া, ৪২নং পিআইসি সভাপতি দুদু মিয়া, ৪৬ নং পিআইসি সভাপতি সুরুজ জামান, বাদাউড়া পিআইসি সভাপতি আব্দুল জলিল, ৯০ নং পিআইসি সভাপতি আবু ছালেক, ৯৯ নং পিআইসি সভাপতি রুবেল আহমদ, নলুয়ার হাওর পিআইসি সভাপতি আরশ মিয়া, ১০৯নং পিআইসি সভাপতি দবির মিয়া, ১১১ নং পিআইসি সভাপতি এলাছি বিবি, সুরাইয়া-বিবিয়ানা পিআইসিি সভাপতি টিপু সুলতান।