মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার: দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের রাড়ইল গ্রামের পার্শ্বে অবস্থিত হুরামন্দিরা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজের গুণগত মান ভালো না থাকা, পিআইসি গঠনে অনিয়ম, হাওরে জমি না থাকা সত্ত্বেও পিআইসিতে অন্তর্ভূক্তিসহ নানা অনিয়ম পাওয়া গেছে। স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য ও সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের কাজ এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫-৩০ শতাংশ হয়েছে। সূত্র মতে, কুলঞ্জ ইউনিয়নস্থ হাওর রক্ষা বাঁধ হুরামন্দিরা হাওরের উপ-প্রকল্পের কোদালিয়া খাল হতে রাড়ইল খেয়াঘাট হয়ে আরামটেক পর্যন্ত নির্মাণ বাধের পিআইসির ৯৩ ও ৯৩-খ বাঁধের কাজ ২৫-৩০ ভাগ হয়েছে। তাছাড়া ৯৩ ও ৯৩-খ নং পিআইসি গঠনেও অনিয়ম পাওয়া গেছে। সূত্র মতে, উক্ত পিআইসিতে চাচা-ভাতিজা, ভাই-ভাই, বাপ-ছেলে এবং হাওরে যাদের জমি নেই, তাদের দিয়েই মূলত পিআইসি গঠন করা হয়েছে।

জানা যায়, পিআইসি ৯৩-এর সভাপতি মোঃ গৌছ মিয়া, সদস্য সচিব মজুমদার মিয়া, সদস্য আব্দুল হামিদ, নুরুল ইসলাম, সিজিল মিয়া, সদস্য সচিব রাড়ইল বাসিন্দা মৃত ফরেজ মিয়া চৌধুরীর ছেলে মজুমদার চৌধুরী। তিনি দিনমজুর হিসেবে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায়ভুক্ত, হুরামন্দিরা হাওরে তার কোন জমি নেই। অপরদিকে মজুমদার চৌধুরীর পরিবারভুক্ত আপন ভাই সুলতান মিয়া পিআইসি ৯৩খ এর সদস্য। তাছাড়া মৃত মুজাফফর মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি-৯৩ এর সদস্য এবং নুরুল ইসলামের ঔরষজাত সন্তান ও একই পরিবারভুক্ত সাজ্জুল মিয়া প্রকল্প ৯৩-খ এর সদস্য সচিব। পিআইসি ৯৩-খ এর সভাপতি মোঃ আবুল কালাম চৌধুরীর পরিবারভুক্ত সহোদর ভাই আব্দুল হামিদ চৌধুরী ৯৩নং পিআইসির সদস্য। ৯৩-খ এর সদস্য রাসেল মিয়া এবং তার মাতা লুৎফা বেগম পিআইসি ৬৬নং এর সদস্য। পিআইসি ৯৩ ও ৯৩-খ-তে অন্তর্ভুক্ত একাধিক সদস্যগণের উল্লেখিত হুরামন্দিরা হাওরে নিজের কোন চাষের জমি না থাকায় কাজের অগ্রগতিও নেই, এখনও বাঁধে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কাজ হয়েছে। টাকা বাচানোর জন্য তারা বাঁধের পাশ থেকেই মাটি উত্তোলন করতেছে, যা বাঁধটি হুমকির মুখেই পড়বে।
সূত্র আরো জানায়, বাঁধের পাশ থেকে এসকেভেলেটর মেশিন দিয়ে মাটি একধাপে তুললে ঘণ্টা হিসেবে আড়াই হাজার টাকা এবং দূর থেকে মাটি আনলে দুই ধাপে ঘণ্টায় টাকা দিতে হয় পাঁচ হাজার টাকা লাগে। এজন্য নিজেদের পকেট ভারী করার জন্যে তারা বাঁধের পাশ থেকেই মাটি উত্তোলন করতেছে, যা এক কথায় অনিয়ম চলছে। এ ধরনের লোকজন নিজেরা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবার মানসে বিভিন্ন কৌশলে পিআইসিতে অন্তর্ভুক্ত হবার ফলে উল্লেখিত হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে মানসম্পন্ন হবার ক্ষেত্রে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সাধারণ কৃষকগন ফসলি জমি নিয়ে মারাত্মক দুঃচিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় আছে। বিসয়টি অতি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন হাওরে থাকা স্থানীয় কৃষকগণ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn