প্রবাসীর স্ত্রী নিয়ে পলায়ন: কুলাউড়ায় ছাত্রলীগ নেতাকে বহিস্কার করল কেন্দ্র
কুলাউড়া :: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মো. তুহিনুর জামান ইয়াকুবকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করেছে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ। বুধবার (১৪ মার্চ) কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসাইন এর স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে এই বহিস্কারাদেশ কার্যকর করা হয়। এর আগে গত আরব আমিরাত প্রবাসী সালামত মিয়া কষ্টার্জিত অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার আদায়ের জন্য আইনী ও প্রশাসনিক সহায়তা চেয়ে আরব আমিরাতের কনস্যুলেটর জেনারেল অব বাংলাদেশের মাধ্যমে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর এক লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয় ঘরের আসবাব পত্রসহ নগদ ৪৭লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ও কন্যা সন্তানসহ কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব তার স্ত্রী রহিমা আক্তারকে নিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী সালামত মিয়ার সাথে ২০১৩ সালে ইসলামি শরিহা মোতাবেক একই ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা আছকর আলীর মেয়ে রহিমার বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের এ দাম্পত্য জীবনে আসে এক কন্যা সন্তান। কিন্তু স্বামী সালামত মিয়া প্রবাস থাকার সুবাদে কুলাউড়া উপজেলার জয়পাশা গ্রামের ছয়ফুল মিয়ার ছেলে তুহিনুর জামান ইয়াকুবের সাথে তার স্ত্রী রহিমা আক্তারের সম্পর্ক রয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় আব্দুল বাছিত, গনি মিয়ার উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও সুরাহা হয়নি। বরং ইয়াকুবের পক্ষ থেকে দুবাই প্রবাসী সালামত মিয়া, দেশে অবস্থানরত তার বোন ও বোনের জামাইকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, বিবাহের সময় স্ত্রীকে দেওয়া নগদ ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, দেন মোহর বাবদ ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, সালামত মিয়ার গ্রামের বাড়িতে জায়গা বিক্রি বাবদ ১৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, পূবালী ব্যাংক রবিরবাজার শাখায় বীমা বাবদ ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, জুড়ী ইউনিয়নের ফুলতলায় আগর গাছ ক্রয়বাবদ ৪ লক্ষ টাকা, ঘরের আসবাব পত্র, টিভি, ফ্রিজ, ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি বাবদ আরও ৭ লক্ষ টাকা ও কন্যা সন্তানকে নিয়ে ইয়াকুবের সাথে পালিয়ে যান স্ত্রী রহিমা বেগম। আর এ কাজে সহায়তা করেন স্ত্রী রহিমা বেগমের মা লায়লা তালুকদার, বড় বোন মেন্দি বেগম ও বোনের স্বামী শাহিন মিয়া। এদিকে কুলাউড়া পৌর শহরের বাদে মনসুর ঈদগা রোড়ে একটি ভাড়া বাসা (হোল্ডি নং-৩৯)-এ ওই প্রবাসীর স্ত্রী ও মাকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব অভিভাবক হয়ে অবস্থান করছেন বলে দাবী করেছেন দুবাই প্রবাসী সালামত মিয়া। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের দেওয়া ভাড়াটিয়া নিবন্ধনের একটি নির্ধারিত ফরমে জরুরি যোগাযোগের স্থলে ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুবের নাম ঠিকানা ও নাম্বার দেওয়া রয়েছে বলেও তিনি দাবী করেন। কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তুহিনুর জামান ইয়াকুবকে বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান রনি।