হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় একা বেঁচে যান প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান
ঢাকা : ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ। সেদিন ছিল বুধবার। যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা কেয়ারের তৎকালীন ঢাকা অফিসে চাকরি করতেন এম এ মান্নান, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী। তখন বয়সে তরুণ এম এ মান্নানকে অফিসের কাজে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হতো। ওই দিন তার কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বা পিআইএ তখন কিছু হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু করেছিল, যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কিছু অঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করত। দুপুর ২টা নাগাদ এম এ মান্নান কুষ্টিয়ার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে আরোহণ করেন। ওই হেলিকপ্টারটিতে সব মিলিয়ে ২৪ জনের মতো যাত্রী ছিল। হেলিকপ্টারটি ঢাকা থেকে প্রথমে ফরিদপুর হয়ে পরে কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা। ঢাকা থেকে ফরিদপুর যেতে ২২ মিনিট এবং ফরিদপুর থেকে কুষ্টিয়া যেতে ২০ মিনিট সময় লাগার কথা ছিল। বায়ান্নো বছর আগের সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ফরিদপুরের কাছাকাছি যখন হেলিকপ্টারটি পৌঁছায় তখন ওপর থেকে বিকট আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। এম এ মান্নান বলেন, “মুহূর্তের মধ্যেই হেলিকপ্টারটি ঘুরতে-ঘুরতে মাটিতে পড়ে যায়। আমি তখন আল্লাহকে ডাকছিলাম আর মায়ের কথা ভাবছিলাম।” মাটিতে পড়ার পর ওই হেলিকপ্টারের মধ্যে প্রচণ্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। প্রাণপণ চেষ্টা করে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তখন ধানক্ষেতে কর্মরত কয়েকজন কৃষক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাদের বাড়িতে এবং পরে হাসপাতালে নিয়ে যান। হেলিকপ্টারে থাকা ২৪ জনের মধ্যে ২৩ জনই সেদিন মারা গিয়েছিলেন – একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী ছিলেন এম এ মান্নান। অনেকটা অলৌকিকভাবে জীবিত থাকা এম এ মান্নান ওই ঘটনা মনে করে এখনো নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সূত্র: বিবিসি