বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আজ। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি অবিসংবাদিত এ নেতা ১৯২০ সালের এ দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ৫৫ বছর বয়সে প্রাণ দিতে হয়েছিল তাকে। বেপরোয়া মনোভাবের পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশেরই কতিপয় বিপথগামীর হাতে সপরিবারে প্রাণ হারান তিনি। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড জাতীয় জীবনের কালিমালিপ্ত এক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।যথাযোগ্য মর্যাদার মধ্য দিয়ে আজ উদযাপিত হবে দিবসটি। দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার কর্ম ও আদর্শ চিরকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে। বঙ্গবন্ধু কেবল বাঙালি জাতির নন, তিনি বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে সবাই মিলে জাতির পিতার অসা¤প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় প্রতিবারের মতো এবারও বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবেন। বাদ জোহর অংশগ্রহণ করবেন দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে শেখ রাসেল স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্তকরণ, ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ শিশুগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, সেলাই মেশিন বিতরণ, ‘উঠব জেগে, ছুটব বেগে’ শীর্ষক ভিডিও প্রদর্শন, শিশু সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান, বইমেলা উদ্বোধন ও শিশুদের আঁকা আমার ভাবনায় ৭ই মার্চ শীর্ষক চিত্রপ্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার সারা দিন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের রেকর্ড বাজানো হবে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে সারা দেশে বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে প্রচার করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ হয়েছে জাতীয় দৈনিকগুলোতে। বিংশ শতাব্দীতে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা বিশ্বনন্দিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের অন্যতম। সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সংগ্রামে অবদান রাখার জন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদের জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হন। বিবিসির এক জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন তিনি।