ব্যারিষ্টার ইমনঃ নান্দনিক সুনামগঞ্জের রূপকার
বাংলাদেশ আওয়ামী রাজনীতির এক উদীয়মান উজ্জ্বল নক্ষত্র তরুণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে জন্ম তাঁর। পিতা প্রয়াত আব্দুর রইছ এম.পি। যিনি আমৃত্যু সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তিনি ছিলেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের দু’বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। মাতা প্রয়াত রফিকা রইছ চৌধুরী। যিনি সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রি ছিলেন। ব্যারিস্টার ইমন ১৯৮৯ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি ও ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে আই.এস.সি পাশ করেন। তিনি ঢাকার ভুঁইয়া একাডেমী থেকে এ লেভেল পাশের পর বিলেতে পাড়ি জমান। বিলেতে তিনি লন্ডন ইউনিভার্সিটি অব অলভারহ্যাম্পটন থেকে এল.এল.বি এবং লিঙ্কন্স ইন থেকে বার-এট’ল ডিগ্রি অরজন করেন। ব্যারিস্টার ইমনের স্ত্রী ব্যারিস্টার ফারজানা শীলা সুপ্রিম কোর্ট এর একজন স্বনামধন্য আইনজীবী।
২০০২ সালে ব্যারিস্টার ইমন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে সস্ত্রীক দেশে ফেরেন। সেদিন বিলেতের বাংলা পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল বিলেতের ঝকঝকে কাড়ি কাড়ি পাউন্ডের মায়া ছেড়ে দেশে ফিরছেন ব্যারিস্টার দম্পতি। দেশে ফেরার পর উন্নত চিন্তা ভাবনায় নিজেকে মনোনিবেশ করেন। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার সহকারী এর্টনি জেনারেল হিসেবে আপিলেট ডিভিশনে সর্বকনিষ্ঠ কৌশলীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে তিনি সুনামগঞ্জ আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে দেশের সর্বকনিষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসেবে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদে দায়িত্ব পান। আর সেই থেকেই তার নান্দনিকতার পথে যাত্রা শুরু। সুনামগঞ্জের জলজোছনা, সম্পদ, পর্যটন, বাউল গান, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে একটি সুতায় বেঁধে এগিয়ে চলেছে নান্দনিক সুনামগঞ্জ। একটি স্বপ্ন আস্তে আস্তে কী করে রূপান্তর হচ্ছে বাস্তবে, সেটাই বলছিলেন এনামুল কবীর। নান্দনিক সুনামগঞ্জের ধারণাটা আসলে কী? জানতে চাইলে ইমন বললেন, ‘সুনামগঞ্জের সুনাম সময়ের ব্যবধানে অনেকটাই ম্লান অথচ বাংলাদেশের মূল উন্নয়নে আমাদের সুনামগঞ্জের ভূমিকা অনেক। সেই হারানো ঐতিহ্যকে আমরা সারা দেশে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে জানাতে চাই সুনামগঞ্জের ইতিহাস। কালিদহ সাগরের বুকে জেগে ওঠা হাওর জলজোছনার কাব্যময়তার সুনামগঞ্জকে গর্বের সঙ্গে ছড়িয়ে দেবে বিশ্বময়।
শিশুদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গড়ে তুলতে নান্দনিক সুনামগঞ্জের আওতায় এরমধ্যে ১৩টি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া হয়েছে রাধারমণ স্মৃতিফলক, হাতে নেওয়া হয়েছে রাধারমণ একাডেমির কাজ। একইভাবে শাহ আবদুল করিমের সমাধি ও ভাস্কর্য তৈরির কাজও হাতে নেওয়া হয়েছে, দুর্বিন শাহসহ অন্য মরমীদের স্মৃতিকে জাগিয়ে রাখতে নেওয়া হয়েছে একই ধরনের উদ্যোগ। তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। এই উদ্যোগের মূল স্বপ্নদ্রষ্টা ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললেন, ‘নিজের ভিতরে তাগিদ থাকলে সম্ভব। এখন পর্যন্ত আমার কাজে তেমন কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি। মানুষের আন্তরিক স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাকে নিয়ত শক্তি জোগায়। অ-তে হবে অপূর্ব বাংলাদেশ।’ বিষয়টা আরো পরিষ্কার করে ইমন বললেন, ‘আমাদের শিশুদের আমরা প্রথমেই অক্ষরজ্ঞান দিই ভয় দেখিয়ে। অ-তে অজগরটি আসছে তেড়ে। সেখানে আমি ‘অ-তে অপূর্ব বাংলাদেশ’ বাক্যটি শিশুদের শেখাতে চাই। আর তখনই শিশুটি মা-বাবার কাছেও জানতে চাইবে অপূর্ব বাংলাদেশ কী? বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা পজেটিভ ধারণা জন্ম নেবে শিশুমনে। বিষয়টি নিয়ে সুনামগঞ্জে এরমধ্যে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমাদের শিশুদের প্রতিটি দিন হোক ভয়হীন, শিক্ষাজীবন হয়ে উঠুক আরো আনন্দময়। জলজোছনা ঘেরা নান্দনিক সুনামগঞ্জের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে।’ ব্যারিস্টার ইমন ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। তিনি ২০১৩ সালে আওয়ামীলীগ থেকে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পান। ২০১৪ সালে ব্যারিস্টার ইমন দ্বিতীয়বারের মতো সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদে জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সুনামগঞ্জে ১৩২-১৩৩ কেবি ওয়াট বিদ্যুৎ সাবস্টেশন স্থাপনের অনুমতি পান। বর্তমানে ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন পাওয়ারগ্রিড কোম্পানির বোর্ড অব ডাইরেক্ট এবং পাওয়ারগ্রিডের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ ‘এ টু ওয়ান’-এর আইন উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। ২০১৬ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সম্পাদনায়ঃ পলি রহমান।