‘ইউরোপিয়ানরা নিরাপদে হাঁটতে পারবেন না’
ইউরোপিয়ানদের সতর্ক করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, তুরস্কের প্রতি ইউরোপ যে মনোভাব পোষণ করছে তা অব্যাহত থাকলে বিশ্বের কোথাও ইউরোপিয়ানরা নিরাপদে হাঁটতে পারবেন না। লন্ডনের অনলাইন এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, কয়েকদিন আগে তার দেশের গণভোট নিয়ে ইউরোপের কয়েকটি দেশে তুরস্কের মন্ত্রীদের নির্বাচনী র্যালি করতে দেয়া হয় নি। তার জবাবে তিনি ইউরোপের কিছু দেশ এখনও ‘নাৎসী পদ্ধতি’ অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ করেন। এর কয়েকদিন পরেই তিনি এ ইউরোপের ‘ড্যামেজ’ বা ক্ষতি করার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। এক্সপ্রেস লিখেছে, এরদোগান আঙ্কারায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন। এ সময় তিনি ইউরোপকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুরস্ক এমন কোনো দেশ যা আপনারা টেনে নিতে বা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে পারবেন। এটা এমন কোনো দেশ নয় যে দেশের নাগরিকদের আপনারা মাটিতে শুইয়ে দিতে বা টেনে নিতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, ইউরোপের দেশগুলো যদি এই পথে চলতে থাকে তাহলে বিশ্বের কোথাও ইউরোপিয়ানরা নিরাপদে রাস্তায় হাঁটতে পারবেন না। ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাবে। তুরস্ক হিসেবে আমরা ইউরোপের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান দেখান। উল্লেখ্য, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ক্ষমতা অসীম পর্যন্ত বৃদ্ধি করার একটি সাংবিধানিক সংশোধনী অনুমোদনের জন্য আগামী ১৬ই এপ্রিল সেখানে গণভোট। সেই ভোটে বৈধ প্রায় ১৫ লাখ তুর্কি বসবাস করেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এর বেশির ভাগই জার্মানিতে। তাই ওইসব ভোটারের মন জয় করতে দেশটির মন্ত্রীদের অনেকে ইউরোপে প্রচারণায় অংশ নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে জার্মানি, নেদারল্যান্ডসে তারা বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। নেদারল্যান্ডসে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভাসোগলুকে বহনকারী বিমান অবতরণ করতেই দেয়া হয় নি। এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে কার্যত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তুরস্ক। নিষিদ্ধ করা হয়েছে আঙ্কারায় নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতকে। তাদের কূটনীতিকদের জন্য তুরস্কের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তবে ইউরোপের বিভিন্ন অংশে এখনও তুর্কি কিছু মন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। নুমান কুর্তুলমাস নামে এক তুর্কি নাগরিক বলেছেন, তুরস্ক ও ইউরোপের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তার কারণে প্রস্তাবিত গণভোটে যেসব সাংবিধানিক পরিবর্তন আনা হয়েছে তা ইউরোপে অবস্থানকারী তুর্কি নাগরিকরা ভালভাবে বুঝতে পারছেন।