নিউইয়র্কের ট্যাক্সি চালকরা আর্থিক সঙ্কটের কারনে চরম হতাশার মধ্য জীবন-যাপন করছেন। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চারজন ট্যাক্সি চালক আত্মহত্যা করেছেন। আর এর প্রধান কারন Uber ও Lyft এর মত মোবাইলের অ্যাপস ভিত্তিক ট্যাক্সি সেবা। ভয়েস অফ আমেরিকার Ramon Taylor এর প্রতিবেদন এবং বাংলাদেশী-আমেরিকার ট্যাক্সি চালকদের সংগঠন ইয়োলো সোসাইটির সভাপতি মো: আব্দুল আউয়াল ভুঁইয়ার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার ও তাওহীদুল ইসলাম।রোমানিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়ে আসা এক ব্যক্তি নিউইয়র্কে ট্যাক্সি চালিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহত করতেন। আর্থিক কষ্টে ৬৫ বছর বয়সে তিনি আত্মহত্যা করেন। নিউইয়র্কে ৩০ বছরের পুরানো এই yellow cab industry বা হলুদ রঙয়ের ট্যাক্সি শিল্পে যারা জড়িত বর্তমানে সবাই কম-বেশী আর্থিক সংকটে রয়েছেন। রোমানিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়ে আসা আরেকজন ট্যাক্সি চালক NICOLAE HENT আত্মহত্যা করা ঐ ট্যাক্সি চালক সম্পর্কে বলছিলেন, “সে এটা নিতে পারেনি। আমি নিতে পারবো। আমি আমৃত্যু লড়াই করবো। আমি এটাকে এভাবে ছেড়ে যাচ্ছি না। এটা আমার অধিকার কারন এই শহরে আমি বিনিয়োগ করেছি এবং এখন তারা আমাকে লুণ্ঠন করছে।“

নিউইয়র্ক শহরে হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি। কিন্তু উবারের মতো ভাড়াটে গাড়ির সংখ্যার কোন সীমাবদ্ধতা নেই। ২০১২ সালে এটা এটা শুরু হবার পর এখন পর্যন্ত এর সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশী। NEW YORK TAXI WORKERS ALLIANCE এর নির্বাহী পরিচালক ((BHAIRAVI DESAI বলছিলেন, ” আমরা আমাদের ভাইদের কবর দিতে দিতে অসুস্থ এবং ক্লান্ত। এটা একটি দুঃস্বপ্ন। যেসব ট্যাক্সি চালক নিজেই ট্যাক্সির মালিক তারা ফোরক্লোসার এবং ব্যাংকক্রাপসির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সবুজ ট্যাক্সি চালকরা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছেন। লিমোজিন চালকরা পেশা ছেড়ে দেবার চেষ্টায় আছেন।” নিউইয়র্কের সিটি হলের সামনে গত ফেব্রুয়ারী মাসে লিমোজিন চালক Doug Schifter নিজেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন। ঐ ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে সপ্তাহে ১০০ ঘন্টার বেশি কাজ করার পরও তিনি যে আর্থিক কষ্টে আছেন, সে সম্পর্কে ফেসবুকে লেখেন। ভারত থেকে অভিবাসী হওয়া NARINDER BEHL বলছিলেন, ” এই মাসের ভাড়া দেবার জন্য আমার কাছে যথেষ্ট অর্থ নেই। লিজের টাকা এবং গ্যাস কেনার পর আপনি নিজের জন্য কিছুই আয় করতে পারবেন না। সুতরাং আগে ১০ ঘন্টায় যা আয় হতো, সে পরিমান অর্থ আয়ের জন্য আমাদের ১৫ থেকে ১৬ ঘন্টা কাজ করতে হয়।“ সূত্রঃ ভয়েস অফ আমেরিকা

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn