ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন বুধবার
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (৩০ মে) সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৪টায় গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এই তথ্য জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশ গেলে সফরের বিষয়বস্তু বরাবর আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে জানান। সব শেষ সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে গত ২ মে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। গত ২৫ ও ২৬ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম দিন কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজরিত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করেন তিনি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুই দিনের সরকারি সফর শেষে শনিবার রাতে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে গত শুক্রবার (২৬ মে) সম্মানিত অতিথি হিসেবে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবনের’ উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন তারা। শনিবার পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রি গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।দেশে ফেরার আগে কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করেন। এই দুটি আনুষ্ঠানিকতার জন্যই প্রধানমন্ত্রীর পশ্চিমবঙ্গ সফরের তথ্য আগেই জানিয়েছিল পররষ্ট্র মন্ত্রণালয়্। তবে এর বাইরে সফরের প্রথম দিন বাংলাদেশ ভবনেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক ঘণ্টার একান্ত বৈঠক হয়েছে শেখ হাসিনার। এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেটি প্রকাশ করেনি দুই দেশের সরকার। একইভাবে সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার আগে আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে আঘা ঘণ্টার একান্ত বৈঠক করেন কলকাতার একটি হোটেলে। এই বৈঠকের পর মমতার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়া হলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি। এই দুটি বৈঠকের দিকে বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনো নাকটীয় ঘোষণা আসে কি না, সে প্রত্যাশায়। তবে এ নিয়ে কী কথা হলো, সেটি প্রকাশ হয়নি।
২০১১ সালেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। ভারতের সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঢাকায় আসেন এই চুক্তি করতেই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বেঁকে যান মমতা। আর তার অসম্মতিতে চুক্তি করতে চাননি মনমোহন। মমতা এখনও তিস্তা নিয়ে চুক্তিতে রাজি নন। তার দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশকে যে পরিমাণ পানি দেয়ার কথা বলছে, সেটা পশ্চিমবঙ্গেই আসে না। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরের উদ্দেশ্য তিস্তা চুক্তি নয়, এই বিষয়টি আগেই খোলাসা করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবু সফর নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা হচ্ছে এই বিষয়টি নিয়েই। কারণ, ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় সরকারর চলতি মেয়াদেই তিস্তা চুক্তির অঙ্গীকার করেছিলেন মোদি। তখন মোদির সঙ্গে ছিলেন মমতাও। আর সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে তিস্তা নিয়ে প্রত্যাশার পারদ আরও উঁচুতে। আর নির্বাচনের বছরে মোদি ও মমতার সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কী অগ্রগতির হয়েছে, তা জানার আকাঙক্ষা আছে দেশবাসীর মধ্যে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছেন তিস্তা নিয়ে অগ্রগতি আছে। তবে সময় মতো তা প্রকাশ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সফরের আনুষ্ঠানিকতার নিয়ে কথা থাকে। তবে প্রশ্নোত্তর পর্বে অন্যান্য বিষয়ও উঠে আসে। তাই মোদি ও মমতার বৈঠকে কী কথা হয়েছে, তা শেখ হাসিনার মুখ থেকেই শোনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।