ঈদে নির্বাচনী এলাকায় আ’লীগের নেতারা
নির্বাচন সামনে রেখে এবারের ঈদে গ্রামে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের বেশিরভাগ নেতা। তবে সিনিয়র নেতাদের কেউ কেউ ঢাকায় থাকছেন। ঈদের পর তারা গ্রামে যাবেন। যারা ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন তারা ইতিমধ্যে নিজ এলাকায় দলের নেতা, কর্মী, সমর্থক, স্বজন ও সাধারণ মানুষদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে ঢাকায় ফিরেছেন। কেউ কেউ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরবেন। নেতারা আলাপকালে জানান, সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই, এবারের রমজান মাস ও ঈদে নির্বাচনী আবহ রয়েছে। যে জন্য পুরো রমজান মাসে ইফতার পার্টি, আলোচনা সভা, মতবিনিময়সহ নানা ব্যস্ততায় কেটেছে তাদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পুরো রমজান মাসেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। তিনি এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন নোয়াখালী জেলায় নিজ এলাকায়। গতকাল তিনি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। ঈদ উদযাপন শেষে তিনি ঢাকায় ফিরবেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন নিজের নির্বাচনী এলাকা ভোলায়। তার ঘনিষ্ঠ একজন জানান, ইতিমধ্যে তোফায়েল আহমেদ এলাকায় অবস্থান করছেন। সেখানে দলীয় নেতা, কর্মী, পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরবেন তিনি। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবার ঈদ পালন করবেন নিজের নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠিতে। ঈদ উপলক্ষে তিনি গতকাল নিজ এলাকায় গিয়েছেন। সেখানে দলীয় নেতা, কর্মী, পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরবেন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঈদ উদযাপন করবেন ঢাকাতেই। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, পরিবারের সদস্য, স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এবারের ঈদ উদযাপন করবেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক জানান, তিনি এবারের ঈদ ঢাকাতেই উদযাপন করবেন। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে মানুষের সঙ্গে দেখা হবে। তাই, রাজনৈতিক নেতারা চেষ্টা করবেন ঈদ উপলক্ষে নির্বাচনী আবহকে ধরে রাখার জন্য। তিনি বলেন, রোজায় এলাকায় (টাঙ্গাইল) গিয়েছি। বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে গিয়ে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঈদ একটি বড় ধর্মীয় উৎসব। পাশাপাশি ঈদকে কেন্দ্র করে সামাজিকতাও অনেক বড়। ঈদ উপলক্ষে সামাজিকতাকেও ধরে রাখার চেষ্টা করি। ১৪ দলীয় জোটের শরীক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, তিনি ঢাকাতেই এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচনী বছর তাই সবসময় যেভাবে ঈদ উদযাপন করি তার চেয়ে এবারের ঈদটি একটু ব্যতিক্রম। আর এবারের ঈদে নির্বাচনী আমেজ উপভোগ করছি। পুরো রমজান মাসটিই খুব ব্যস্ততায় কেটেছে। রমজান ও ঈদে নির্বাচনী আমেজ আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। বরিশালে নিজের এলাকাসহ ঢাকায় আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ইফতার পার্টি হয়েছে। এছাড়া দল ও জোটের বিভিন্ন ইফতার পার্টিতেও অংশ নিয়েছি। জাসদের (একাংশ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবার ঢাকাতেই ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঈদের দিন সকালে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবো। এরপর বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট ও গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবো। পরে বাসায় এসে পরিবারের সদস্য, স্বজনদের সঙ্গে ঈদের দিনটি কেটে যাবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এবার আমি পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই ঈদ করবো। তিনি বলেন, রমজান মাসে এলাকায় (দিনাজপুর) গিয়েছি। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেছি। ঈদ উপলক্ষে এলাকার গরিব, দুস্থদের কিছু সাহায্য সহযোগিতা করেছি। তিনি বলেন, ঈদ একটি বড় উৎসব। এই উৎসবে সবার সঙ্গে শরীক হওয়াই আনন্দের। আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, এবারের ঈদ আমি নিজের নির্বাচনী এলাকা পিরোজপুরে উদযাপন করবো। এ উপলক্ষে মঙ্গলবারই এলাকায় এসেছি। আমাদের রাজনৈতিক দলের সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছি। ঈদ উপলক্ষে গরিব দুস্থদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছি। তিনি বলেন, এমনিতে গ্রামের বাড়িতেই ঈদ উদযাপন করি। তবে, এবার যেহেতু একটা উপলক্ষ (জাতীয় নির্বাচন) আছে তাই এবার আগ্রহটা একটু বেশি।