ঢাকা শহরকে ঘিরে এলিভেটেড রিং রোড করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
যানজট নিরসনে রাজধানী ঢাকা শহরকে ঘিরে একটি এলিভেটেড রিং রোড নির্মাণ করা হবে। এতে এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল সহজ হবে। সময় সাশ্রয় হবে, যানজটও কমবে। এছাড়া ঢাকার আশেপাশে যেসব নদী আছে সেসব নদীকে ঘিরেও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। তৈরি করা হবে নৌযান চলাচল উপযোগী বড় বড় ব্রিজ। শনিবার (২৮ জুলাই) বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর হাতিরঝিল নর্থ (মেরুল বাড্ডা) ইউলুপ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ইউলুপটি উদ্বোধনের পর তা জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এই ইউলুপের ফলে হাতিরঝিল থেকে সহজেই রামপুরা-বনশ্রী হয়ে মালিবাগের দিকে যাওয়া যাবে। অন্যদিকে এসব এলাকা থেকে বের হয়ে হাতিরঝিল হয়ে কারওয়ানবাজার এলাকায় যেতে পারবেন যাত্রীরা।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। এজন্য গাড়ি কেনার সামর্থ্যও বেড়েছে। যে কারণে রাস্তাঘাটে গাড়ি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বের সব দেশেই যানজট হয়। ঢাকায়ও যানজট আছে। তাই যানজট মোকাবিলায় আমরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। বাকি অংশ চালু হবে পরের বছর, ২০২০ সালে। রাজধানীর জলাবদ্ধতা কমানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে ঢাকা শহরের মধ্যে থাকা বক্স কালভার্টগুলো ভেঙে ফেলে খালগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে এর ওপর দিয়ে এলিভেটেড রোড করা হবে। তিনি বলেন, বক্স কালভার্ট করা হয়েছে অনেকগুলো খাল বন্ধ করে। যার ফলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসলে বক্স কালভার্ট কোনও সমাধান নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাই তখন এসব বক্স কালভার্ট আমরা ভেঙে দিয়ে খালগুলো উন্মুক্ত করে দেবো। প্রয়োজনে খালের ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেবো। খালের ওপর দিয়ে রাস্তা থাকবে আর খালগুলো উন্মুক্ত থাকবে।’ বর্ষার পানি ধারণের সুবিধার জন্য রাজধানীসহ সারা দেশের সব খাল-বিল-নদী-পুকুর সংস্কার ও ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা সরকার ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি। ঢাকার আশেপাশের নদীগুলো নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা যে চারটি নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত এই নদীগুলোকে ঘিরে নৌ পরিবহনের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে আরও উন্নত হয় সে পদক্ষেপও আমরা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এজন্য নদী ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ছোট ছোট ব্রিজগুলো সরিয়ে নৌযান চলাচলের উপযোগী বড় বড় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সমন্বিত হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ইউলুপ প্রকল্পটি নির্মাণ করেছে। ২১৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থ ইউলুপটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। রামপুরা-বনশ্রী এলাকার যানজট নিরসনে ২০১৬ সালের শুরুতে এ ইউলুপ নির্মাণের কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী।