সিলেটের অপুকে নিয়ে ‘দুঃখের কথা’ জানালেন নায়িকা মাহি
একজন শিল্পীর দু-দুটি ছবি মুক্তি পায়, তাহলে তো কথাই নেই। উত্তেজনা, রোমাঞ্চ, আনন্দ সবই হয়ে যায় দ্বিগুণ। মাহিয়া মাহির বেলায়ও তা-ই হয়েছে। ‘জান্নাত’ ও ‘মনে রেখো’, ঈদের দুই ছবির নায়িকা তিনি। এ নিয়েই কথা বললেন মাহি। ছবির পাশাপাশি তিনি দিলেন তাঁর নতুন এক উদ্যোগের খবরও।
মাহির শ্বশুরবাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। তার স্বামী অপুকে ঘিরে ‘দুঃখের কথা’ও জানালেন তিনি।
ঈদ কেমন কাটল?
পরিবারের সঙ্গে বেশ ভালো ঈদ কাটিয়েছি। ঈদে আমার দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত এটা নিয়ে ভয়ে ছিলাম। কিন্তু ছবি মুক্তির পর ভয় কেটে গেছে। প্রতিটি ছবি মুক্তির আগেই আমার এমন ভয় হয়। মনে হয়, দর্শক ছবি পছন্দ না করলে কী হবে আমার!
ঈদের ছবি দুটি নিয়ে কী শুনছেন দর্শকদের কাছ থেকে?
জান্নাত ছবিটি নিয়ে সবাই ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন। আর মনে রেখো দেখে ৭০ ভাগ দর্শক বলেছেন ভালো, আর বাকিরা বলছেন আরও ভালো হতে পারত। আমি নিজে ঈদের পরপরই সনি সিনেমা হলে গিয়ে মনে রেখো দেখেছি। আমার ভালো লেগেছে। এটা বিনোদনে ভরপুর একটি ছবি। প্রেম, অ্যাকশন, কমেডি সব আছে এতে। একদম ‘মসলা’ ছবি যাকে বলে।
ঈদের ছুটি শেষ। শুটিং শুরু করেছেন?
ছুটি শেষ। তবে শুটিং নিয়ে আপাতত ব্যস্ত হচ্ছি না। কারণ, আমি একটি নতুন কাজ করতে যাচ্ছি। ‘ভারা’ নামে নিজের একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড চালু করতে যাচ্ছি। এখানে থাকবে নারী-পুরুষ-শিশুদের জন্য পোশাক। তৈরি করবেন স্থানীয় নারী কর্মীরা। অনেক আগে থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল এমন কিছু একটা করব, যেখানে নারীরা নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পারবেন। সেই ইচ্ছাপূরণের জন্যই আপাতত শুটিং থেকে অল্প সময়ের বিরতি নিচ্ছি।
একদম নতুন একটি ক্ষেত্রে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন, ভয় হচ্ছে না?
সেটা তো হচ্ছেই। অনেকে বলছেন, আমি নাকি পারব না। কারণ, নতুন কিছু দাঁড় করাতে যে সময় দেওয়া লাগে, সেই সময়টা আমি দিতে পারব না। তবে আমি নিজেই নিজেকে সাহস দিয়ে ঝুঁকিটা নিয়ে নিলাম। সব ঠিকঠাক থাকলে ২৭ অক্টোবর ব্র্যান্ড লঞ্চ (উদ্বোধন) করার ইচ্ছা। ওই দিন আমার জন্মদিন।
ঝুঁকি নেওয়ার অনুপ্রেরণা পেলেন কার কাছ থেকে?
একদিন আমি গাড়িতে বসে দেখছিলাম রোদে গায়ের রং পুড়ে যাওয়া রোগা এক ব্যক্তি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাছ বিক্রি করছেন। হাঁড়িতে মাত্র তিনটি ইলিশ মাছ। দাম জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ৭০০ টাকা। প্রতিটি মাছে তিনি হয়তো ২০০ বা ১০০ টাকা লাভ করবেন। কথা বলে জানলাম, এই মাছ কিনে আনতে তাঁর পুঁজি মাত্র ১ হাজার ৫০০ টাকা। আমি ভাবলাম, লোকটি যদি ঝুঁকি নিয়ে তাঁর সব পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করার সাহস দেখাতে পারেন, আমি কেন পারব না। এরপর থেকেই আমি একটু একটু কাজ শুরু করি। জুন মাসে একটি সেলাই মেশিন নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। এখন ১৫টি সেলাই মেশিন কিনেছি। তাতে ১৫ জন নারী কর্মী কাজ করবেন। তাঁদের দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে ভারার যাত্রা হবে। শোরুম দিয়েছি ঢাকার উত্তরায়।
পরিবার থেকে পাশে পেয়েছেন কাকে?
আমার শ্বশুর আর বড় বাবা (বড় চাচাশ্বশুর) আমাকে খুব সাহস দিয়েছেন। তাঁরা আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, ‘তুমি কারও কথা কানে নিয়ো না। সাহস করে ঝুঁকি নাও। সব সামলে নেওয়ার জন্য আমরা আছি।’ তাঁদের সাহসেই এখন রাত-দিন এক করে নিজের ইচ্ছাপূরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
অমিতাভ রেজা, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, সবার আগে কার সঙ্গে কাজ করতে চান?
অমিতাভ রেজা ও ফারুকী ভাই। কারণ তাঁদের সঙ্গে একটু-আধটু আলাপ আছে। সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে কখনো কথা হয়নি। তাঁকে রাগী রাগী মনে হয়! (হাসি)
শেষ কবে কেঁদেছেন?
গত রাতে। মনে হচ্ছিল, আমার পাশে কেউ নেই। আমি একা।
আপনার স্বামী ভালোবেসে কী নামে ডাকে?
আমার জীবনের একমাত্র দুঃখ অপু আমাকে কোনো আদুরে নামে ডাকে না।