তিস্তা চুক্তি নিয়ে প্রণবের মধ্যস্থতা চান -প্রধানমন্ত্রী
বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনই তথ্য জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী পত্রিকা আনন্দবাজার। প্রণব মুখার্জী ইউপিএ-সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় দীর্ঘদিন তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে দরকষাকষি করেছেন। চুক্তির সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ই তার জানা। কাজেই কেন্দ্র, রাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে পারেন প্রণব। এমনটাই মনে করছেন শেখ হাসিনা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রণববাবু মধ্যস্থতা করলে নরেন্দ্র মোদির জন্যও ভালো। মোদি নিজেও এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির ওপর ভরসা করছেন। মোদি সরকার মনে করছে, হাসিনার সফরকে উপলক্ষ করে রাষ্ট্রপতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। এই সফরে চুক্তি সই না হলেও অন্তত রাষ্ট্রপতি ভবনেই নরেন্দ্র মোদি ও মমতার মধ্যে তিস্তা চুক্তি নিয়ে বরফ গলতে পারে। ২০১০-এও হাসিনার সফরের সময় মমতা দিল্লিতে এসেছিলেন। তার জন্য শাড়িও নিয়ে এসেছিলেন। হাসিনার সঙ্গে তাঁর দিদি-বোনের সম্পর্ক বলেও উল্লেখ করেছিলেন মমতা।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ভারত সফরে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনেই থাকবেন হাসিনা। হাসিনাকে স্বাগত জানাতে রাষ্ট্রপতি ভবন এখন সাজছে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাসিনার সম্পর্ক বহু পুরনো। তার স্ত্রী-র সঙ্গেও হাসিনার সখ্য ছিল।
আনন্দবাজার লিখেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তিস্তার বিষয়ে পুরোপুরি নেতিবাচক মনোভাব নিয়েছেন, তা নয়। তার বক্তব্য, রাজ্যেব স্বার্থ রক্ষার দিকটি দেখতে হবে। কিন্তু মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে না। সোমবার লোকসভায় তৃণমূলের তরফে সৌগত রায় একই অভিযোগ তুলে জানিয়েছেন, তারা রাজ্যের সম্মতি ছাড়া এই চুক্তিতে সইয়ের বিরুদ্ধে। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু-চুক্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা-চুক্তিতে ভিন্ন অবস্থান নিচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন সৌগত।
ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার বিএনপি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী প্রচার শুরু করে দিয়েছে। তবে তিস্তা চুক্তি হলে হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের হাত শক্ত হবে। আর দেশের মাটিতে বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিকে বিপণন করতে চান হাসিনা। বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক সম্পদ নিয়েও বাংলাদেশের সঙ্গে বোঝাপড়া মজবুত করতে চান মোদি।