শাবিতে ৯ম বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াড-১৮ অনুষ্ঠিত
নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞানমনস্ক ও বিজ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) সিলেট বিভাগের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবম বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াড-২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ রসায়ন সমিতি আয়োজনে এবং শাবির রসায়ন বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই রসায়ন অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শাবির মুক্ত মঞ্চে বেলুন উড়িয়ে ৯ম বাংলাদেশ অলিম্পিয়াড-১৮ সিলেট অঞ্চলের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস এবং ৯ম রসায়ন অলিম্পিয়াড সিলেট অঞ্চলের আহ্বায়ক ও শাবি রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলম প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাবি উপাচার্য বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের দিক দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম। ২০০৩ সালে এখানে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে অলিম্পিয়াড প্রচলন শুরু হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা বলি ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিন্তু, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে বিজ্ঞানকে ভালোবাসতে হবে এবং বিজ্ঞান চর্চা করতে হবে। এর আগে সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ‘বি’ এর সামনে অলিম্পিয়াডের স্টল থেকে রসায়ন অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে টি-শার্ট বিতরণ করা হয়। টি-শার্ট বিতরণ শেষে সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে প্রতিযোগিতারা জাতীয় সংগীতে অংশগ্রহণ করেন।
নবম বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াড সিলেট বিভাগের মোট ৩৯টি কলেজের প্রায় ১১শত জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী শেষে শাবির তিনটি একাডেমিক ভবনে শিক্ষার্থীদের সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রসায়ন বিষয়ের উপর বহুনির্বাচনি প্রশ্নে পরিক্ষা নেওয়া হয়। এর মধ্য থেকে সেরা ২০ জন শিক্ষার্থী বাছাই করে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করবে। পরিক্ষা শেষে শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে দুপুরের খাবার বিতরণ করা হয়। সিলেট বিভাগের অলিম্পিয়াড আয়োজকদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলম বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের মাঝে রসায়ন বিষয় নিয়ে একটু বেশি ভয় কাজ করে। আমাদের এই অলিম্পিয়াডের মূল লক্ষ্যই হলো শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনষ্ক করা, বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা, রসায়নের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা। এদিকে, দুপুর দুইটা থেকে শাবি কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ৯ম বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াডের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সমাপনী অনুষ্ঠানের আগে অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে রসায়ন বিষয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং কুইজে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরষ্কিত করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে শাবি উপাচার্য প্রধান অতিথির বক্তব্যে অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী দিনের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বিজ্ঞানের উপর। আর এটার মূল নিয়ামক তোমরা। সেজন্য তোমাদেরকে বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা জাগাতে এবং বেশি বেশি পড়তে হবে। তিনি ক্যাম্পাসের প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, এক সময় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হবে পেপারলেস। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই বই গুলো পড়তে পারবে। ৯ম বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াডের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অনুষ্ঠিত অলিম্পিয়াডের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে আরও রসায়ন বিভাগের উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক সৈয়দ শামসুল আমল এবং সহকারী অধ্যাপক মাসুম তালুকদার প্রমুখ। সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০ জন বিজয়ীদের মাঝে ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট প্রধান করা হয়। যারা পরবর্তীতে ঢাকায় প্রতিযোগিতা করবে। এর মধ্যে প্রথম পাঁচজন হলেন, ১ম দীপিকা রানী নাথ সরকারি এমসি কলেজ, ২য় মনিম শাহরিয়ার হৃদয় সরকারি এমসি কলেজ, ৩য় হাসান মাহমুদ সাহেদ সরকারি এমসি কলেজ, ৪র্থ ইত্তেহাক চৌধুরী স্কলার হোম স্কুল এন্ড কলেজ, ৫ম মিনহাজ আহমেদ সরকারি এমসি কলেজের ছাত্র। নবম বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াডের স্পনসর হিসেবে ছিলেন সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রি, সমকাল, এবং হা-মীম গ্রুপ।