প্রতিদিন ৮ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারীর মৃত্যু হয়
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট, রেড্ডিট এবং অন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে ফেসবুকের দুই বিলিয়ন, হোয়াটসঅ্যাপের ১.৫ বিলিয়ন, ইনস্টাগ্রামের এক বিলিয়ন এবং টুইটারের ৩৩৬ মিলিয়ন ব্যবহারকারী আছে। ব্যবহারকারী বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ফেসবুক। তবে এই সোশ্যাল মিডিয়াটির ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর হারও কম নয়। প্রতিদিন প্রায় আট হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারীর মৃত্যু হয়। নিজেদের জীবনের অনেক সময় এসব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যয় করলেও ব্যবহারকারীদের খুব কম জনই ভাবেন যে তারা মারা যাওয়ার পর তাদের অ্যাকাউন্টগুলোর কী হবে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো একজন ব্যবহারকারীর মৃত্যুর পর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও ও পোস্টগুলো কিভাবে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে? সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ পবন দুগাল বলেন, কেউ ইমেইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো রেখে মারা গেলে তার উত্তরাধিকারীদের অবশ্যই সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ থাকা উচিত। ইতোমধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর মৃত্যুর পর একজন পরিবারের সদস্য বা বন্ধু যেন তার অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করতে পারে সেজন্য লিগ্যাসি কন্টাক্ট নামের একটি অপশন চালু করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও ফেসবুক ব্যবহারকারী মারা গেছে বলে জানতে পারলে আমরা তার অ্যাকাউন্টটিতে মৃত্যুর বিষয়টি স্মরণ করবো। তার অ্যাকাউন্টটির টাইমলাইনের শীর্ষে থাকা এই লিগ্যাসি কন্টাক্টে পোস্ট করা যাবে। এই পোস্টে যদি কেউ লাইক দেয়, তবে পোস্ট করা ব্যক্তিকে মৃতের অ্যাকাউন্টের আর্কাইভে থাকা ছবি, পোস্ট এবং প্রোফাইলের তথ্য ডাউনলোড করার অনুমতি দেয়া হবে। তবে মৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে কেউ লগ ইন করতে বা তার ব্যক্তিগত বার্তাগুলো দেখতে পারবে না কেউ। একজন ডিজিটাল উত্তরাধিকারী মৃত ব্যবহারকারীর সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটানো মূল্যবান মুহূর্তগুলো সংরক্ষণ এবং হার্ড ডিস্ক, ক্লাউড স্টোরেজ, পেন ড্রাইভ বা ডিভিডির মতো মাধ্যমগুলোর সাহায্যে তা পরবর্তী প্রজন্মকে উপহার হিসেবে দিতে পারবেন। মৃত ব্যবহারকারীর উত্তরাধিকারীরা প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ দিয়ে ডিজিটাল/সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর কাছে তার অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চেয়ে আবেদন করতে পারবে।
পবন দুগাল আইএএনএস’কে বলেন, অবশ্যই এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আদালতের আদেশ ছাড়া আবেদনকারীকে মৃত ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের সুযোগ দেয়া উচিত হবে না। জিমেইল, ইউটিউব এবং পিকাসা ওয়েব অ্যালবামসের মালিক গুগলের একটি ‘ইনঅ্যাক্টিভ অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার’ ফিচার আছে। এতে ব্যবহারকারী একজনকে মনোনীত করতে পারে, যার কাছে তার তথ্য দেয়া যাবে। যদি কোনও ব্যবহারকারী বেশ কিছুদিন তার অ্যাকাউন্টটিতে লগ ইন না করে, তবে এটি মুছে ফেলা হবে বা বিষয়টি মনোনীত ব্যক্তির সঙ্গে শেয়ার করা করা হবে। টুইটারের মতে, তারা একজনের অ্যাকাউন্ট আরেকজনকে ব্যবহারের সুযোগ দিতে পারবে না। কিন্তু ফেসবুকের মতো ইনস্টাগ্রামও মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয় স্মরণ করবে কিন্তু তার অ্যাকাউন্টটি পরিবর্তন করতে পারবে না। অন্য কাউকে লগ ইন করার সুযোগও দিতে পারবে না এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। অ্যাপল আইক্লাউড এবং আইটিউনস অ্যাকাউন্টগুলো কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয়। তাই এগুলোর তথ্য কেউ পাবে না কখনও।