সুনামগঞ্জে শিল্প ও পণ্য মেলাকে ঘিরে দর্শনার্থীদের মধ্যে আনন্দ উচ্ছাস
হাসন রাজা, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমসহ অনেক খ্যাতিমান সাধকদের দেশ সুনামগঞ্জে এখন সাধারণ মানুষের মনে আনন্দের খোরাক যোগাচ্ছে শিল্প ও পন্য মেলা। হাওর-বাওর বেষ্টিত গানের দেশ ঐতিহ্য আর সাংস্কৃতির অঞ্চলের মানুষের দোড়গোড়ায় এখন পৌছে গেছে বিনোদনের নানা আয়োজন। গত ২৭ জানুয়ারি সুনামগঞ্জে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ও বাংলাদেশ বেনারশি মসলিন এন্ড জামদানি সোসাইটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে শিল্প পণ্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান। এই মেলায় প্রথমবারের মতো সংযোজন করা হয়েছে। অলিম্পিক সার্কাস প্রদর্শনী, ডেঞ্জার গেমস, যাদু প্রদর্শনী, শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশু পার্ক আইটেম, দৃষ্টিনন্দন ঝর্ণাধারা প্রভৃতি। মেলার প্রবেশদ্বারেই তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরন। যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে। আয়োজকরা জানান, প্রান্তিক এই জনপদ সুনামগঞ্জের মানুষকে নির্মল আনন্দ দিতে প্রথমবারের মতো এই মেলায় সন্নিবেশন করা হয়েছে নানা ধরনের বিনোদনের খোরাক। মেলায় প্রবেশ মূল্য ১০টাকা। মেলার শেষ দিন রাত ১০:৩১ মিনিটে প্রবেশ টিকের উপর অনুষ্ঠিত হবে র্যাফেল ড্র। এতে ৭টি মোটর সাইকেল সহ আকর্ষণীয় পুরস্কার রয়েছে। মেলায় একশ’টি স্টল তাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে নিয়েছে, রয়েছে আকর্ষনীয় ১৭টি প্যাভিলিয়ান। রয়েছে নামাজের জায়গা ও প্রয়োজনীয় শৌচাগার।
মেলার আয়োজকরা আশাপ্রকাশ করছেন শুক্রবার থেকে পুরোদমে মেলার কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। মেলাকে ঘিরে সুনামগঞ্জ জুড়ে দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা। মেলার আয়োজক জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দ সার্বক্ষনিক মেলা আয়োজনের বিভিন্ন দিক তদারকি করে যাচ্ছেন। সামগ্রীক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও রয়েছেন তৎপর। তাছাড়া সিসি ক্যামেরা দ্বারা পুরো মেলা মাঠটি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবেও মেলা আয়োজনের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে।
মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা জানান, শুরুতে উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও দুএকদিনের মধ্যে দর্শনার্থীদের ভিড় ভেড়ে যাবে। দর্শনার্থী ফৌজিয়া জানান, দীর্ঘদিন পর মেলার আয়োজন হওয়ায় খুবই ভাল লাগছে। মার্কেটে চড়ামুল্যে অনেক কিছু কিনতে হয়। মেলায় কমদামে ভাল মানের পণ্য পাওয়া যায় তাই মেলাতে আসছি। ঘুরাঘুরি বেশ ভাল লেগেছে। মেলায় সরজমিনে গেলে কথা হয় কয়েকজন শিশু-কিশোরদের সাথে। তারা জানায়, এ মেলায় আসতে পেরে তারা খুবই আনন্দবোধ করছেন। অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিসপত্র তারা দেখতে পারছেন, খেলতে পারছেন।
আরো একজন ব্যবসায়ী জানান, মেলায় রয়েছে দেশি-বিদেশি পন্যের অপুর্ব সমাহার। সেই সাথে রয়েছে শিশু-কিশোরদের বিনোদনের ব্যবস্থা। মেলায় আগত একজন দর্শনার্থী রাকিবুল হাসান জানান, এ বছর সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও বাংলাদেশ বেনারশি মসলিন এন্ড জামদানি সোসাইটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মাসব্যাপী মেলা চলছে। আমাদের জেলা সদরে বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় মেলায় শিশু-কিশোরদের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলায় অপ্রীতিকর যে কোন সমস্যা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত আছেন। দির্ঘদিন পর মেলা হওয়ায় জেলাজুড়ে ব্যপক সাড়া পড়েছে।