এখনও মানুষ আমাকে বলে দিলদারের বউ, এটা খুবই লজ্জাজনক’
নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে চলচ্চিত্রে এলেও পার্শ্ব চরিত্রেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন নাসরিন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন তিনি। কিন্তু মনের মধ্যে থেকে গেছে নায়িকা না হতে পারার আক্ষেপ। আর এর কারণ হিসেবে অন্যান্য নায়িকাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাসরিন। সেই আক্ষেপ-ক্ষোভ থেকেই মাঝে মাঝে বলে ফেলেন কঠিন সত্য কথা। ‘অভিনয় জীবনে হয়তো অনেক কিছুই পেয়েছি আবার কিছুই পাই নি। যদি বলি যে অনেক কিছুই পাই নি তাহলে এর জন্য অনেক বড় নায়িকারা দায়ী। যেমন- মৌসুমী, শাবনূরের জন্য আমি কাজ করতে পারতাম না।’ সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের জীবনের গল্প তুলে ধরতে গিয়ে এসব কথা বলেন অভিনেত্রী নাসরিন। ৫০০শ’ অধিক সিনেমায় অভিনয় করা নাসরিনের চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে ১৯৯২ সালে নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে। এত বছর ধরে অভিনয় করলেও নিজের কোন অবস্থান তৈরি করতে পারেন নি। অল্প বয়সে নায়িকা হয়েছি উল্লেখ করে নাসরিন বলেন, আমি ছোট ছোট চরিত্র করে এসেছি। মাত্র ১২ বছর বয়সে নায়িকা হয়েছি। এতটুকু বয়সে কেউ নায়িকা হয় না। আর যারা এসেছে তারা নায়িকা হয়েই এসেছেন। তাদেরকে অনেকে সাপোর্ট দিয়েছে কিন্তু আমাকে তারা দেয়নি।
অভিনেতা দিলদারের সাথে অভিনয় প্রসঙ্গে বলেন, সবাই আমাকে দিলদারের নায়িকা হিসেবে ট্রিট করতো। যার কারণে পরিচালকরা আমাকে নায়িকা হিসেবে কাজে নিত না। আমার সাথে জুটি বেঁধে দিলদার ভাইয়ের জনপ্রিয়তা বেড়েছে কিন্তু আমার কিছুই হয় নি বরং আমার ক্যারিয়ার মাইনাস হয়েছে। আমি রাস্তা ঘাটে বের হলে এখনও মানুষ আমাকে বলে দিলদারের নায়িকা যাচ্ছে, দিলদারের বউ যাচ্ছে। এটা আমার জন্য খুবই লজ্জাজনক। নাসরিন বলেন, আমি থাকলে অনেকে কাজ করতে চাইতো না। আমার ক্লোজ শট রাখতে দিত না। মেকআপ করে আমাকে একটু অন্যরকম করে দেওয়া হতো। তারপর লাইট কম দেওয়া হতো আমার দিকে। এসব করতেন ওই নায়িকারা। এগুলো যখন দেখতাম আমার অনেক কষ্ট লাগত। আমার সিকুয়েন্স রাখতো না। পারলে আমাকে বাদই দিয়ে দেয়। আমার সাথে অনেক অন্যায় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার আজকের যা অবস্থান তা আমার জন্য। আমি থাকলে সে কাজ করবে না ছবিতে। পরিচালকরা আমাকে বাদ দিয়ে দিত। আমার সাথে যদি এমন আচরণ না করতো তবে আমি হয়তো আজকে তাদের অবস্থানেই থাকতাম। নাসরিন বলেন, একটা গানের শুটিং হবে ব্যাংককে যেটাতে চিত্রনায়ক রিয়াজের সাথে কেয়া ছিল। কেয়া নাচতে জানে না এই জন্য তাকে বাদ দিয়ে দিবে ছবি থেকে। তখন ডিপজল ভাই বলল তুই এই ছবির নায়িকা, কেয়া বাদ। ছবিতে নায়ক দুজন রিয়াজ ভাই আর আমিন খান ভাই। তখন আমি কেয়াকে ডেকে এনে আমার সাথে নাচ দেখালাম, প্র্যাকটিস করালাম নৃত্য পরিচলক মাসুম বাবুলের সামনে। এরপর কেয়াকে বললাম যা কাজ কর। পরে ডিপজল ভাইকে বললাম কেয়া যদি কালকে সেখান থেকে ফেরত আসে তাহলে আমিই নায়িকা হবো। আমি তাদেরকে এভাবে হেল্প করতাম। কিন্তু আমাকে কোন দিন কেউ কোন হেল্প করে নি।