বর্তমানে হ্যাকারের হাত থেকে নিরাপদ নন কেউই। বড় বড় প্রতিষ্ঠান, বিখ্যাত কোনো তারকার সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট, এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটও হ্যাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। গত বছর পৃথিবীজুড়ে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন একশ কোটি মানুষ। চলতি বছরও প্রতি সপ্তাহে হরহামেশা এমন ঘটনা ঘটছে। অথচ একটু সচেতন হলে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত ডেটা নিরাপদ রাখা যায়। তবে কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করে হ্যাকিং-এর হাত থেকে বাঁচতে পারেন আপনিও।

১. আপনার কোনো তথ্য ফাঁস হয়েছে কি না সেটি প্রথম আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে। Have I Been Pwned নামের একটি ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার মেইল কিংবা কোনো পাসওয়ার্ড লিখে সার্চ দিয়ে এটি পরীক্ষা করতে পারেন।

২. আপনার পাসওয়ার্ড কিংবা মেইল অন্য কেউ ব্যবহার করলে উপরের ওয়েবসাইটটি আপনাকে জানিয়ে দেবে। তখন আপনাকে পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে নিতে হবে।

৩. পাসওয়ার্ড মাঝে মাঝে চেঞ্জ করা এমনিতে ভালো। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। কীভাবে শক্ত পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হয়, সেটি আপনাকে জানতে হবে।

মনের খেয়ালে অনেকেই ‘১২৩৪৫’-এর মতো পাসওয়ার্ড দিয়ে অনলাইনে কার্যক্রম চালান। এটি মোটেই ঠিক নয়। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে আট কিংবা তার বেশি সংখ্যা ব্যবহার করা উচিত। এর ভেতর আবার অক্ষরও রাখা উচিত।

অনেকে আছেন, যারা ভুলে যাওয়ার শঙ্কায় কঠিন পাসওয়ার্ড দিতে চান না। তারা কোনো গানের লাইন কিংবা শব্দগুচ্ছ মনে রেখে পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারেন। পাসওয়ার্ড লিখে রাখা যদি খুব দরকারি হয়, তবে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করতে পারেন।

কেউ কেউ মনে রাখার সুবিধার্থে সব ধরনের কাজের জন্য একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি একটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে ফেলে, তবে অন্য সব অ্যাকাউন্টের জন্যই সেটি ব্যবহার করতে পারবে। তাই প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্যই আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত।

৪. ফেসবুক কিংবা অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে চিন্তায় থাকলে দুই স্তরের প্রমাণীকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। অর্থাৎ কেউ আপনার পাসওয়ার্ড চুরি করে ফেসবুকে ঢুকতে চাইলে আপনার ফোনে একটি কোড যাবে, সেটি ছাড়া লগইন হবে না। কারণ প্রতিবার লগইনের সময় আপনার ফোনে ভিন্ন-ভিন্ন কোড যাবে।

৫. আমরা অনেক সময় না জেনে বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে ফেলি। যেটি যেকোনো অ্যাকাউন্টের জন্য ঝুঁকির বিষয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অ্যাড ট্র্যাকিং বন্ধ করে রাখা উচিত।

৬. বেশি সমস্যা হলে ব্রাউজার পাল্টে ফেলতে পারেন। প্রচলিত গুগল কিংবা মজিলা ছেড়ে চলে যেতে পারেন ফায়ারফক্স ফোকাসে। এই ব্রাউজার বেশ নিরাপদ। এখানে কম ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে হয়।

৮. আরও সাবধানতার জন্য পেইড ভিপিএন ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার আইপি ঠিকানা এবং ইন্টারনেট ট্রাফিক হাইড করে রাখে। ভিপিএন তৃতীয় পক্ষকে আপনার কোনো তথ্য নিতে দেয় না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn