ধানসংগ্রহ বরাদ্দ বাড়ানোসহ ১০ দফা দাবিতে কৃষক সংহতির স্মারকলিপি
২০১৮ ও ২০১৯ সনে ‘ব্লাস্ট’ ও চিটায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষককে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ভাইরাসজনিত বীজ বিআর-২৮ শোধন করে সরবরাহ, উৎপাদন অনুপাতে কৃষক পর্যায়ে হয়রানিমুক্ত পরিবেশে ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে ‘কৃষক সংহতি’। বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ খাদ্যমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপিটি প্রদান করেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হারুনুর রশিদ। স্মারকলিপির অনুলিপি কৃষিমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দকেও প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন কৃষক সংহতির নেতা এডভোকেট রুহুল তুহিন, এডভোকেট এনাম আহমেদ, এডভোকেট কল্লোল তালকুদার চপল, এডভোকেট সন্দিপ দাস, সাংবাদিক শামস শামীম, এডভোকেট আব্দুল খালেক, সাংবাদিক এ আর জুয়েল, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। স্মারকলিপিতে উপস্থাপনকৃত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে গত ১৯ মে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক পাঠানো প্রতিবেদনে গত বছরের মতো এবারও সর্বনাশা চিটায় ক্ষতির তথ্য লুকানো হয়েছে। ফাঁকিবাজ উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা হাওরে না গিয়ে ঘরে বসেই মাঠের প্রতিবেদন তৈরি করে কৃষকদের সহায়তা থেকে বঞ্চিত করছে। বেশি ফলনের আশায় বিআর-২৮ ধান লাগানোর প্রলোভিত প্রচারণায় হাওরের সাড়ে তিন লাখ চাষী পরিবার এই বীজ লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই আগামীতে এই বীজ শোধন করে কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করে এই বীজে লুকায়িত ভাইরাসে হাওরের জীববৈচিত্রের ক্ষতি করছে কি না তা গবেষণার দাবি জানানো হয়। ক্রমাগত কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে কৃষকদের কাছ থেকে হয়রানিমুক্ত পরিবেশে উৎপাদন অনুসারে ধানসংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির কথা বলা হয় স্মারকলিপিতে। এছাড়াও তপসিলি ব্যাংকগুলো বরাদ্দ অনুযায়ি রহস্যজনক কারণে কৃষকদের মধ্যে কৃষিঋণ বিতরণে উৎসাহী নয়। তাদেরকে সহজ শর্তে কৃষকদের মধ্যে বরাদ্দকৃত ঋণ বিতরণের দাবি জানানো হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় কৃষকরা কোন পরামর্শ পাচ্ছেন না। ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষক। স্মারকলিপিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মধ্যে কৃষিবীমা চালুর দাবিও জানান নেতৃবৃন্দ। কৃষক সংহতির নেতা এডভোকেট এনাম আহমেদ বলেন, আমাদের হাওরের সাড়ে তিন লাখ চাষী এবার ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মে.টন ধান উৎপাদন করেছেন। কিন্তু উৎপাদন অনুপাতে নগন্য ধান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, বিপরিতে চালকল মালিকদের কাছ থেকে উদ্বেগজনক হারে চালের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে। কৃষকরা বাজারেও ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেননা। অন্যদিকে প্রলোভিত প্রচারণায় কৃষক বিআর-২৮ লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। কৃষকদের বাচাতে আমরা ১০ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি।