মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন রাহুল ও সোনিয়া
ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার শপথ নিতে যাচ্ছেন। সন্ধ্যা ৭টায় রাইসিনা হিলসে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাকে শপথ পাঠ করাবেন। তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও শপথ নেবে। এ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এ অনুষ্ঠানে প্রথমে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে তা বাতিল করেছেন। মমতা যোগ না দিলেও কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী যোগ দিচ্ছেন। শুধু সোনিয়াই নয়, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও যোগ দিতে যাচ্ছেন শপথ অনুষ্ঠানে। শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। গতকাল বুধবার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। সে হিসাবে আজ রাইসিনা হিলসে মুখোমুখি হবেন নরেন্দ্র মোদি ও রাহুল গান্ধী। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ভারতের গণমাধ্যমসহ জনমনে জোর কল্পনা চলছে। কেননা নির্বাচন চলাকালীন তারা একে অপরের কটাক্ষ ও সমালোচনায় মেতে ছিলেন। বিষয়টি এতদূর গিয়ে গড়ায় যে, রাজীবের বাবা ও ভারতের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকেও আক্রমণ করে বসেন নরেন্দ্র মোদি। পাল্টা জবারে মোদির রুচি আর শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাহুল। এদিকে নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন প্রিয়াংকা গান্ধীর সামনে শিশুদের মুখে নরেন্দ্র মোদি বিষয়ে বিরূপ স্লোগানের একটি ভিডিও বেশ সমালোচনার জন্ম দেয়। এতকিছুর পর আজ মোদি-রাহুলের সাক্ষাৎ কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা চললেও পেছনের সব ঘটনাকে নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবেই জানাচ্ছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এদিকে প্রথমে মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা জানালেও পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন মমতা ব্যানার্জি।
বুধবার ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি টুইট করে শপথ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। টুইটে মমতা অভিযোগ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণের মতো একটি অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে একটি দল। মঙ্গলবার রাতে মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- গত ছয় বছরে পশ্চিমবঙ্গে খুন হওয়া বিজেপিকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে ‘বিশেষ আমন্ত্রিত’ হিসেবে রাখা হবে। প্রতিবেশী দেশ থেকে মোদির এ শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ যোগ দিচ্ছেন। মোদির প্রথমবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু এবার বিমসটেক সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পাকিস্তানকে এড়াতে ‘বিমসটেক’ সদস্যভুক্ত দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কারণ পাকিস্তান বিমসটেকের সদস্য নয়। জানা গেছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিরা শপথ অনুষ্ঠানে আসছেন।
প্রসঙ্গত ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস ধরে সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ মে একযোগে ফল ঘোষণা করা হয়। এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট পেয়েছে ৩৫৩ আসন। সরকার গঠনের জন্য ৫৪২ আসনের মধ্যে ২৭২টি আসন পেলেই যথেষ্ট ছিল বিজেপির। সেখানে বিজেপি এককভাবে ৩০৩ আসন পেয়েছে। এ জয়ের মধ্য দিয়ে মোদির ‘আব কি বার ৩০০ পার’ স্লোগানই সত্য হয়।