সুনামগঞ্জ :: আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট ও চাঁনপুর সীমান্ত দিয়ে বেড়েছে চোরাচালান। বৃহস্পতিবার ( ৩০ মে ) ভোর ৪টায় টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরের সময় ১মে.টন চোরাই কয়লা আটক করেছে বিজিবি। কিন্তু চোরাচালানীদের গ্রেফতার করাসহ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ব্যাপারে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। এ ব্যাপারে বড়ছড়া ও চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানায়,সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে টেকেরঘাট কোম্পানীর লাকমা গ্রামের মৃত শফি মেস্তুরীর ছেলে অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী ইয়াবা ব্যবসায়ী ল্যাংড়া বাবুলের নেতৃত্ব চোরাচালানী মানিক মিয়া,বদিউজ্জামাল,আক্কাছ মিয়া,ফিরোজ মিয়া,কামাল মিয়া,রমজান মিয়া,ইউনুছ মিয়া,বিল্লাল মিয়া,আব্দুল মিয়া,ভুট্টো মিয়া,শফিকুল মিয়া,আব্দুল মিয়া,নাজিম মিয়া,শহিদ মিয়া,জাকির মিয়াসহ মোট ২৭জনকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেড তৈরি করে প্রতিদিন লাকমা ও টেকেরঘাট খনিপ্রকল্প এলাকা দিয়ে ভারত থেকে কয়লা,মদ,অস্ত্র ও ইয়াবা পাচাঁর করা হচ্ছে। এবং পাচাঁরকৃত ১বস্তা কয়লা থেকে বিজিবি ও পুলিশের নামে ১শত টাকা,১হাজার পিছ ইয়াবার জন্য ৫০হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছে ল্যাংড়া বাবুল।

অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী বড়ছড়া ও বুরুঙ্গাছড়া এলাকা দিয়ে বিজিবি ও পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে চোরাচালানী ফিরোজ মিয়া ও কামাল মিয়া ৩০জনকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেড তৈরি করে প্রতিদিন কয়লা,অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে বিজিবি ও পুলিশের নামে চাঁদা উত্তোলন করছে। আর পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা ক্রয় করছে বড়ছড়া শুল্কস্টেশনের চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া ও তার এক সহযোগীরা। এছাড়া চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলা,কড়ইগড়,রাজাই,চাঁনপুর ও যাদুকাটা নদী এলাকা দিয়ে বিজিবি সোর্স পরিচয়ধারী মাদক মামলার আসামী আবু বক্কর,জম্মত আলী ও রফিকুলের নেতৃত্বে ৩৫জন চোরাচালানীকে নিয়ে সিন্ডিকেড তৈরি করে প্রতিদিন ভারত থেকে গরু,ঘোড়া,বিড়ি,মদ,ইয়াবা ও অস্ত্র পাচাঁর করেছে। এবং পাচাঁরকৃত ১টি গরু থেকে চাঁনপুর ক্যাম্পের নামে ২হাজার টাকা,থানার নামে ১হাজার টাকা,স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নামে ৮শত টাকা,দুই মেম্মারের নামে ৬শত টাকা,স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের নামে ৩শত টাকা চাঁদা নিয়ে সোর্স আবু বক্কর ও রফিকুল।

এ ব্যাপারে চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী মাদক মামলার আসামী আবু বক্কর বলেন,আমাদের ব্যাপারে লেখালেখি করলে কিছুই হবে না কারণ আমরা যা করছি সবাইকে ম্যানেজ করেই করছি। টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলার আসামী ল্যাংড়া বাবুল বলেন,আমরা চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করবই,পারলে কিছু করে দেখান। টেকেরঘাট বিজিবির কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার লিয়াকত বলেন,চোরাচালানের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে অবৈধ মালামালসহ চোরাচালানীদেরকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করি এবং প্রায় প্রতিদিনই পাচাঁরকৃত কয়লা জব্দ করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম বলেন,সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি ও চোরাচালান বন্ধের জন্য উপরের উল্লেখিত সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাচালানীদের গ্রেফাতারের জন্য প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগীতা কামনা করছেন তাহিরপুর উপজেলার ৩ শুল্কষ্টেশনের হাজার হাজার বৈধ ব্যবসায়ীরা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn