তাহিরপুরে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়
এম.এ রাজ্জাক,তাহিরপুর– ঈদকে কেন্দ্র করে তাহিরপুর উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি অপরুপ টাঙ্গুয়া হাওর, শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী লেক), বারেকটিলা, শিমুল বাগান, হাবেলী দূর্গ, যাদুকাটা নদী, লাকমা চড়া, লালঘাট চড়া সহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট গুলোতে ইদকে কেন্দ্র করে এখন দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের প্রথমদিন থেকে পর্যটন স্পটগুলোতে এখন পর্যন্ত কোথাও তীল ধারনের টায় নেই। ঈদের ছুটি উপভোগ করতে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি নৌকা দিয়ে মাইক, সাউন্ডবক্র বাজিয়ে বিয়ের সাজে সজ্জিত হয়ে নিজেরা বিনোদিত হচ্ছেন। গান-বাজনা করে নেচে-গেয়ে স্থানীয়দের বিনোদিত করছেন। ঈদের দিন থেকে ঈদের দুই দিন পর্যন্ত দর্শনার্থীরা বেশী এসেছেন পর্যটন স্পটগুলোতে। প্রতিদিন সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভী বাজার, নেত্রকোনা, মহনগঞ্জ, কলমাকান্দা, ছাতক, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর সহ বিভিন্ন জেলা,উপজেলা থেকে শত শত নৌকা ও মোটরসাইকেল দিয়ে এসে পর্যটন স্পটগুলোর উচু নিচু টিলা , হাওর ও পাহাড়ী চড়া উপভোগ করেছেন দর্শনার্থীরা। ময়মেনসিংহ জেলা থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন তরুণদের সংগঠন সেভেন স্টার। দলপতি নিপা ও সৌভন বললেন, বারেকটিলা, টাঙ্গুয়া হাওর ও নিলাদ্রী লেক শিমুল বাগানসহ আকর্ষণীয় স্থানগুলো যে কত সুন্দর, তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা হতো না। তারা বলেন, যদি এই স্পটগুলোর যাতায়াত ব্যবস্থা ও থাকা খাওয়ার সু ব্যবস্থা করা হয় তাহলে এখানে আরও দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে পরিবার পরিজন নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর উপভোগ করতে আসেন সিলেট থেকে পিযুষ পুরকায়স্থ টিটু।তিনি জানান, টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেকটিলা,শহীদ সিরাজ লেক, বাগলী পাহাড়ী চড়া সহ বিভিন্ন স্পট দেখা হয়েছে। এ স্পটগুলো যত দেখী ততই আকর্ষন বারে। তাই সময় পেলেই পরিবার পরিজন ও বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে চলে আসি গান বাজনা করে উপভোগ করার জন্য। তাহিরপুর সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কুল ঘেষা ২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে যাদুকাটা নদী। যাদুকাটা নদীর পানি এতই সচ্চ যে নূড়ি পাথর আর বালির খেলা দেখা যায় স্পষ্ট। আর এই দৃশ্য দেখে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হন এখানে আসা দর্শনার্থীরা। মহনগঞ্জ থেকে নৌকা ভ্রমনে আসা কলেজ পড়ুয়া, সেপালী, শারমিন, প্রভাতী, রোমা, শিউলী, মনির জানান, যাদুকাটা ও শহীদ সিরাজ লেকের পানি খুবই পরিষ্কার ও নীল রংয়ের। গোসল করে মনে হচ্ছে হালকা লাগছে। কারণ হিসেবে তারা জানায়, এই দুইটি স্পটের পানি এত পরিষ্কার যে, পানির দিখে তাকেলে নিজের মুখ আয়নার মত ভেসে উঠে। নদী থেকে মেঘালয় পাহাড়ের দৃশ্য দেখে খুব ভাল লাগে।
যাদুকাটা নদীর পশ্চিম তীর ঘেষে রয়েছে নয়নাভিরাম বারেকটিলা। যাদুকাটা নদীর তীর থেকে পাহাড়ী আঁকা বাঁকা উচু পথ বেয়ে উপরে উঠলে চোখে পড়ে ঘন আর সবুজের সমাহার। বারেকটিলাতে ঘুরতে আসা ঢাকা থেকে পিংকি নামের এক শিক্ষিকা বলেন, বারেক টিলা দেখে খুব ভাল লেগেছে, মনে হচ্ছে হিমালয়ে আরোহন করেছি। বারেকটিলা থেকে তিন কিলোমিটার ট্যাকেরঘাট ডিসি পার্ক। ডিসি পার্কের আশ পাশে রয়েছে ছোট বড় টিলা। টিলার একপাশে রয়েছে রেষ্ট হাউজ। আর এই রেষ্ট হাউজের পাশেই রয়েছে শহীদ বীর বিক্রম সিরাজ লেক ( নিলাদ্রী লেক) ও শহীদ স্মৃতিসম্ভ। ট্যাকেরঘাট থেকে একটু দূরেই দূরে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়া হাওর। টাঙ্গুয়ার বুক জুড়ে রয়েছে সুবিশাল চির সবুজের বেষ্টনী। সারি সারি হিজল,করচ,নলখাগড়ার বিপুল সমাহার। হাওরের এক পাশে রয়েছে বিশাল ওয়াস টাওয়ার। আর এই ওয়াস টাওয়ার থেকেই হাওরের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা।