‘অনলাইন সার্চের মাধ্যমেও ছড়াচ্ছে উগ্রপন্থা’
অনলাইনে চরমপন্থী মতাদর্শ বিস্তার রোধের লড়াই-এ পশ্চিমা দেশগুলোর পরাজয় ঘটছে বলে জানানো হয়েছে এক গবেষণায়।গবেষণায় বলা হয়েছে, সহিংসতা ও উগ্রপন্থাকে সমর্থন করে এমন লেখা, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি ইন্টারেনেটে ছড়িয়ে পড়ছে এবং ক্রমশই সেগুলোর প্রাধান্য বিস্তারলাভ করছে। যৌথভাবে এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ব্রিটেনের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার অন রিলিজিয়ন এন্ড জিওপলিটিক্স এবং জরিপ প্রতিষ্ঠান ডিজিটালিস। সেখানে বলা হচ্ছে, ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে লোকজন এখন আগের তুলনায় এধরনের বিষয়বস্তু বেশি পরিমাণে খুঁজছে। এক হিসাবে বলা হচ্ছে, সারা বিশ্বে প্রত্যেক মাসে শুধুমাত্র গুগলেই এধরনের পাঁচ লক্ষের মতো তথ্য খোঁজা হচ্ছে। সার্চ ইঞ্জিনে তারা এমন সব কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে যা অনুসন্ধানকারীকে এক পর্যায়ে উগ্রপন্থার বিষয়বস্তুর দিকেও নিয়ে যাচ্ছে।
গবেষণাটির উপসংহারে বলা হয়েছে, লোকজন যে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে চরমপন্থার দিকে চলে যাচ্ছে তা নয়, অনলাইন সার্চের সময়েও অনেকে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। একসময় ধারণা করা হতো যে ফেসবুক, টুইটারের মত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই উগ্রপন্থার ব্যাপারে লোকজনের ‘মগজ ধোলাই’ হচ্ছে। ব্রিটেনেও এই প্রবণতা বাড়ছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ২০১০ সালের পর থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০০০ এবং এখন পর্যন্ত মোট আড়াই লাখের মতো বিষয়বস্তু ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
‘কাফের’ দিয়ে শুরু:
গবেষকরা ধারণা করছেন খুব সাধারণ একটা শব্দ দিয়েই হয়তো এই উগ্রপন্থী হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরকম একটি শব্দ হলো ‘কাফের’ বা অবিশ্বাসী। কিন্তু এই শব্দটি দিয়ে সার্চ করতে গেলে দেখা যায় যে সেখানে হয়তো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পতনের কথা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা যেখানে খলিফার মাধ্যমে শরিয়া আইনের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করার কথা বলা হচ্ছে। তারপর পাঠককে সেখান থেকে খুব দ্রুত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আরো অনেক বেশি উগ্রপন্থী বিষয়বস্তুর দিকে, যেখানে অমুসলিমদেরকে হত্যারও আহবান পর্যন্ত করা হচ্ছে। ব্রিটেনের পুলিশ বলছে, তারা আড়াই লক্ষ ‘উগ্রপন্থী’ বিষয়বস্তু ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে দিয়েছে। চরমপন্থার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এমান এল-বাদাওই বিবিসিকে বলেছেন, “লোকজন খুব পরিষ্কার করেই জানে তারা যে জিহাদি ভিডিও দেখছে সেটি কোথা থেকে এসেছে। কারণ সেখানে ভিডিওটির উৎসের কথা খুব স্পষ্ট করেই উল্লেখ করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “সমস্যাটা ভয়াবহ তখনই যখন উগ্রপন্থী তথ্য আপনা আপনি সামনে এসে হাজির হয়। সেখান থেকে লোকজন পরে আরো ভয়াবহ তথ্যের দিকে চলে যেতে পারে।”
খবর: বিবিসি বাংলা