সিলেট-আখাউড়া রেল লাইন: ঝুকির মধ্যে অধিকাংশ সেতু
মোহাম্মদ নূর উদ্দিন:ঢাকা-সিলেট রেললাইনের হবিগঞ্জ অংশের অধিকাংশ সেতুই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক স্থানে সেতুর সিপারের জীর্ণ অবস্থা, এ জন্য সেখানে সংযুক্ত করা হয়েছে বাঁশ। সংযোগের বিভিন্ন স্থানে নেই প্রয়োজনীয় নাটবল্টুও। দ্রুত সংস্কার না করলে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, রেললাইন মজবুত করার জন্যই বাঁশ দেওয়া হয়েছে। এতে ঝুঁকির কোনও সম্ভাবনা নেই। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট রেললাইনের হবিগঞ্জের অংশের ৫২ কিলোমিটারে ৮৪টি ছোট-বড় ব্রিজ-কালভার্ট রয়েছে। এসবের অধিকাংশেরই একই অবস্থা। সরেজমিন দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জের কদমতলী বড়চর এলাকায় ৯৩ নম্বর বড়বিল সেতুর ৮০টি নাটের মধ্যে রয়েছে মাত্র ৩৪টি। অধিকাংশ নাটবল্টু খুলে নিয়ে গেছে দুবৃৃত্তরা। এছাড়া সিপারের সঙ্গে রয়েছে পুরনো বাঁশ। ট্রেন চলার সময় ব্রিজের সিপার ওঠানামা করে, নড়বড়ে মনে হয় ব্রিজটিকে। বড়চর গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, সেতুটির সিপারের কাছে বাঁশ ও লোহা দিয়ে জোড়া দেওয়া হয়েছে। এমনকি সিপারের জোড়ায় কোনও নাটবল্টুও নেই। অনেক সিপারের সঙ্গে একটা নাট থাকলেও পাশের অপরটিতে কিছু নেই। ট্রেন চলার সময় গ্রাম থেকে লক্করঝক্কর শব্দ শোনা যায়।
শায়েস্তাগঞ্জ কলেজ শিক্ষার্থী হাসান শাহারিয়ার তারেক জানান, এই সেতুটির দূর থেকে বোঝার উপায় নেই যে এখানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা অপেক্ষা করছে। মাঝেমধ্যে কর্মকর্তারা কাঠের সিপার দিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া সিপারকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তা বেশি দিন টেকে না। এছাড়াও সুতাং ও খোয়াই নদীর ওপরের সেতুর অবস্থাও নাজুক। যেকোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শায়েস্তাগঞ্জ দক্ষিণ বড়চর গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউর রহমান জানান, সেতুর জয়েন্টগুলো ফাঁকা রয়েছে। সিপারের অনেক নাট-বল্টু হাত দিয়েই খুলে নেওয়া সম্ভব। নড়বড়ে হয়ে গেছে সেগুলো। এ ব্যাপারে আখাউড়া রেল সেকশনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আক্তার খান বলেন, ‘সিপারের সঙ্গে বাঁশ লাগালে স্লিপার শক্ত থাকে। পুরনো স্লিপারের গ্যাপ পূরণের জন্য বাঁশ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও ধরনের ঝুঁকি নেই।’ ঝুঁকি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অনেক স্থান থেকে ক্লিপ মিসিং হচ্ছে। দুর্বৃত্তরা খুলে নিয়ে যায়। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করে থাকি। এছাড়া নাট নষ্ট হয়ে গেলে আমরা তা নতুন করে লাগাই। এ ধরনের সেতুতে রেল চলাচল ঝুঁকির মধ্যে পড়ে না।’ -সৌজন্যে:হবি:সমাচার