আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে ৩১০ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলা
এছাড়া রুবিনা খানম নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের যে হিসাব দুদকে দাখিল করেন, তাতে তিনি ৫ কোটি ৯০ লাখ ২৮ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। আর দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়, তিনি ৩১ কোটি ৫১ লাখ ২৩ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। এ কাজে তাকে সহায়তার জন্য স্বামী আবজাল হোসেনকেও সহযোগী আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(২) এবং ২৭(১) ধারাসহ ২০০৯ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২(ফ) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধে ৪(২)(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারাও সংযুক্ত করা হয়। অন্যদিকে আবজালের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা মানি লন্ডারিং এবং ২ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয় মামলায়। অভিযোগে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল এডুকেশন শাখার সাবেক হিসাবরক্ষক (সাময়িক বরখাস্ত) আবজাল হোসেন ওই অধিদফতরে কর্মরত থেকে একজন সরকারি চাকরিজীবী ক্ষমতার অপব্যবহারের আশ্রয় নেন।
তিনি দুর্নীতির আশ্রয়ে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের হিসাবে ২০০৯ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও ২০১২ সালের লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২(য) ধারায় সন্দেহজনক লেনদেন করেন। তার এই লেনদেনে অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন ছিল। এই লেনদেন অসামঞ্জস্যপূর্ণ । এতে তিনি ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা মানি লন্ডারিং করেন, যা ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২(শ) ধারার (১) উপধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া এ প্রক্রিয়ায় ‘দুর্নীতি’র সম্পৃক্ত অপরাধে অর্জিত তার সম্পদ ওই আইনের ২(গ) ধারা অনুযায়ী অপরাধলব্ধ আয়।
ফলে তিনি ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় উত্তোলন করেন। যার অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা আড়ালে স্থানান্তর বা রূপান্তরের ছদ্মাবরণে তিনি মূলত এই অর্থ পাচার করেছেন। এছাড়া তিনি দুদকের কাছে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ১ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ টাকার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এই সম্পদ তিনি ভোগদখলে রেখে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(২) এবং ২৭(১) ধারা এবং ২০০৯ ও ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের একাধিক ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করায় ১৯৪৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায়ও অভিযোগ আনা হয়। আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর পর তিনি সপরিবারে গোপনে দেশত্যাগ করেন। দুদকের পক্ষ থেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি ৫ কোটি টাকা লেনদেন করে ইমিগ্রেশন পার হয়ে দেশ ছেড়ে পালান। আবজাল দম্পতির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি আদালতের নির্দেশে ক্রোক ও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।