নয়ন বন্ড একদিনে তৈরি হয়নি, তাকে তৈরি করা হয়েছে: হাইকোর্ট
রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এর পরের দিন দ্বিতীয় আসামি রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিনই তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী। এ মামলার এজাহারভুক্ত গ্রেফতাররা হলেন মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী (২৩), ৪ নম্বর আসামি চন্দন (২১), ৯ নম্বর আসামি মো. হাসান (১৯), ১১ নম্বর আসামি মো. অলিউল্লাহ অলি (২২) ও ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় (২১)। এ ছাড়া রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্ততে সন্দেহভাজন গ্রেফতাররা হলেন মো. নাজমুল হাসান (১৯), তানভীর (২২), মো. সাগর (১৯), কামরুল হাসান সাইমুন (২১) ও রাফিউল ইসলাম রাব্বি।
প্রসঙ্গত, ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ দুর্বৃত্তরা রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। বন্নি স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়। রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জানান, বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে নয়ন বন্ড ও তার প্রতিবেশী দুলাল ফরাজীর দুই ছেলে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী এবং রাব্বি আকন তার স্বামীর ওপর হামলা করে। তিনি বলেন, আমার সামনে ওই সন্ত্রাসীরা রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি শতচেষ্টা করেও আমার স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আয়শা আক্তার মিন্নির সঙ্গে দুই মাস আগে রিফাত শরীফের বিয়ে হয়। বুধবার রিফাত ও তার স্ত্রী মিন্নি সকাল ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা রাম দা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়। রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে নয়ন তার দলবল নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার একমাত্র ছেলেকে যারা দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে আমি মামলা করেছি। পুলিশ যেন তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনে।