তাহিরপুরে ত্রাণের জন্য হাহাকার
এম.এ রাজ্জাক :: টানা কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢলের পানি একদিন বিরতিতে আবারো বাড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি কমলেও শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে আবার অতি বর্ষনের সঙ্গে সঙ্গে পানি দ্রæত বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার কারণে তাহিরপুর উপজেলার পানিবন্দি মানুষের দূর্ভোগ বাড়ছে। হাওর পাড়ের বসতবাড়ী ঢেউয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বন্যাদুর্গত মানুষ আশপাশের উচু স্থান, বিদ্যালয় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। হাওর এলাকার অধিকাংশ ঘরে ভিতরে পানি ঢুকে পড়েছে। শুকনো খাবার ও ত্রানের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে বন্যাদূর্গত এলাকায়। তাহিরপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পানি ঢুকে কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। শনিবার উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদ্দাচ্ছির আলম সবুল জানান, স্কুলের বন্যা আশ্রয় কে›ন্দ্র দুইজন লোক দিয়ে সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে। হাওর এলাকার অনেকেই ফোন করে আশ্রয় নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। তাদের বলেছি পরিবার পরিজন নিযে যেকোন সময় কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিতে। দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়নের নোয়ানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, বানের পানিতে তার বসতভিটা ভেঙ্গে গেছে। কূল কিনারা না পেয়ে সবাইকে নিয়ে তিনি এখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপজেলার মারালা গ্রামের নজরুল ইসলাম, ছয়ফুল ইসলাম, সাইকুল ইসলাম ও আনু মিয়ার বসতভিটা ঢেউয়ের কবলে ভেঙ্গে পড়ায় তারা সবাই প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয়দের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাহিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি তালুকদার জানান, উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে ৩টি, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে ৩টি, বালিজুড়ি ইউনিয়নে ১টি ও বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামে ১টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম, ও শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মিয়া হোসেন জানান, সরকারীভাবে বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও কোন প্রকারের ত্রাণসামগ্রী বন্যাশ্রয় কেন্দ্র না আশায় বালিজুরী, বড়খলা, আনোয়ারপুর, লোহাচুরা, দক্ষিণক‚ল, নয়াহাট, বারুঙ্কা, গোবিন্দশ্রী, রতনশ্রী, চতুর্ভূজ, ভাটি তাহিরপুর, রাজধরপুর, পৈন্ডুপ, সাহেবনগর, উজান তাহিরপুর, ভবানীপুর, সন্তোষপুর, জাঞ্জাইল, ইকরামপুর, লামাগাঁও, দুমাল, মাহতাবপুর, মাহমুদপুর, রামজীবনপুর, গোপালপুর, ল²ীপুর, মাটিয়ান, পিরিজপুর, শরীফপুর, চিকসা, জামালগড়, গাজীপুর, বড়দল, কাউকান্দি, চানপুর, মাহরাম, নোয়াহাট, জয়পুর, গোলাবাড়ী, মুজরাই, তরং, নয়াবন্দ, জামালপুর, ভোরাঘাট,বালিয়াঘাট পাতারগাঁও, ধরুন্দ, ইউনুছপুর, লক্ষীপুর, গোলকপুর, মন্দিয়াতা, শিবরামপুরসহ অনেক গ্রামে ত্রানের জন্য হাহাকার করছেন লোকজন।