তাজুল ইসলাম :: দোয়ারাবাজারে সোমবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত বন্ধ হলে সুরমাসহ উপজেলার সকল নদ-নদীর পানি ক্রমশ হ্রাস পেলেও কমেনি জনদূর্ভোগ। দীর্ঘ ১১ দিন মেঘাচ্ছন্ন আকাশের ঘোর কেটে রোদের ঝলকানিতে আশার সঞ্চার হলেও ভাটিতে পানির টান না থাকায় নি¤œাঞ্চলের পানি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। উপজেলা সদরের সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের সংযোগ সড়কগুলোর অবস্থা এমনিতেই বেহাল দশা, তার উপর আবার বয়ে যাওয়া লাগাতার ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল, এ যেন ‘মরার উপর খরার ঘা’।  খানাখন্দ, ভাঙন আর হাঁটুসমান কাদা থাকায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সড়কগুলো। অফিসপাড়াসহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসাটা দীর্ঘসূত্রিতার ব্যাপার।  কারণ দোয়ারাবাজার-বগুলাবাজার সড়কের মোহাম্মদপুর (মামনপুর) মোকাম সংলগ্ন শতাধিক ফুট ভাঙনে উপজেলা সদরের সাথে সীমান্তবর্তী বগুলা, লক্ষীপুর ও সুরমা (আংশিক) ইউনিয়নের ২৫ গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অপরদিকে দোয়ারাবাজার-বালাবাজার, দোয়ারাবাজার-নরসিংপুর ভায়া ব্রিটিশ-বালিউরা, নরসিংপুর-চাইরগাঁও (ক্যাম্পেরবাজার) রাস্তারও একই দশা।
ফলে নরসিংপুর, বাংলাবাজার ও দোয়ারা সদর (আংশিক) ইউনিয়বাসীও চরম দূর্ভোগে ভোগছেন। প্রয়োজনীয় লোকবল ও সুষ্ঠ তদারকির অভাবে এসবের কোনো কোনো রাস্তার সংস্কারকাজ চলছে ধীর গতিতে। শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এ দিকে জেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষি (খামারি) সুরমা ইউনিয়নের টেংরা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, সাম্প্রতিক সৃষ্ট বন্যায় শতাধিক পুকুরের অন্তত কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় আমরা খামার মালিকগন বড়ই বিপাকে পড়েছি। আমাদের এ ক্ষতি অপূরণীয়।  প্রশাসনিক সুষ্ঠ তদারকির অভাবে ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতায় খাসিয়ামারা ও চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিয়মের ফলে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও মাছ চাষসহ সর্বক্ষেত্রেই আজ আমরা চরম হুমকির সম্মুখিন। একইভাবে উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও দোকানপাটগুলোকে সুরমার অব্যাহত ভাঙন ঠেকাতে সদ্য সমাপ্ত ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কার্যক্রমের বিরুদ্ধেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন এসব অনিয়মের খেসারত হিসেবে খোদ উপজেলা পরিষদ ভবন সম্মুখস্থ সড়কে বৃহদাকার ফাঁটল, দোয়ারাবাজার-লাফার্জ সড়কের মাস্টার পাড়া এলাকায় অন্তত অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা ও বাড়িসহ ৭টি দোকান অচিরেই সুরমার অথৈ গহ্বরে বিলীন হয়ে গেছে। আর এসব ধ্বংসজজ্ঞের মূল কারণ হচ্ছে মওজুদ থাকা সত্বেও নির্ধারিত জিওবি ব্যাগ সঠিকভাবে না বসিয়েই ড্যাম্পিং ব্যবস্থা সম্পন্ন করা।  জানতে চাইলে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, নির্মাণকারী এসব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষসহ বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn