শহীদনুর আহমেদ:: পৌরসভার নাগরিক সকল প্রকারের সেবা বন্ধ করে রাজস্ব খাত থেকে বেতনভাতাসহ সকল সুযোগসুবিধা প্রাপ্তির দাবিতে ঢাকায় আন্দোলন করছেন সুনামগঞ্জের ৪টি পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্রচারীরা। তালা ঝুলছে প্রতি শাখা দপ্তরের ফটকে। জরুরি সেবা নিতে এসে খালি হাতে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন পৌরসভার সাধারণ জনগন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। নিজেদের দাবি আদায়ে সাধারণ মানুষকে সেবা বঞ্চিত করে দাবি আদায়কে অনৈতিক বলছেন সচেতনমহল। এভাবে চলতে থাকলে জনদুর্ভোগ বাড়তে থাকবে বলে মনে করছেন তারা। তবে দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসলেও দাবি আদায় না হয়ায় বাধ্য হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। জানা যায়, বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে সারা দেশের ন্যায় ৩২৮টির পৌরসভাসহ সনামগঞ্জ, ছাতক, জগন্নাথপুর ও দিরাই পৌরসভার প্রায় আড়াইশ’ কর্মকর্তা -কর্মচারীরা গত ১৪ জুলাই থেকে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গিরকার করেছেন নেতৃবৃন্দ। আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনেরও হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা। এদিকে নাগরিক সেবা বন্ধ করে পৌরসভার কর্মচারীরা ঢাকায় অবস্থান করায় মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে পৌরসভা এলাকায়। শহর পৌর এলাকা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না করায় ময়লার স্তুপ জমে রয়েছে। পানি, রাস্তার বিদ্যুৎ সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ নাগরিক। জন্মনিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, মৃত্যুসনদ, ওয়ারিশান সনদ, লাইসেন্স সেবা বন্ধ থাকায় থেকে আছে নাগরিকদের দাপ্তরিক কাজ। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন পৌর এলাকার বাসিন্দারা। এভাবে চলতে থাকলে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন অনেক ভুক্তভোগী।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ি দুলাল মিয়া বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ব্যাংক লোন তোলার প্রয়োজনে লাইসেন্স নবায়ন করা প্রয়োজন। আমি তিন দিন পৌরসভায় গিয়েছি সংশ্লিষ্ট শাখা বন্ধ থাকায় কাজের কাজ হলো না। কবে কাজ হবে তাও জানিনা। উকিলপাড়ার বাসিন্দা সাহেল মিয়া বলেন, এ কেমন কথা দাবি আদায় করতে গিয়ে সকল নাগরিক সেবা বন্ধ করে ঢাকায় অবস্থান করছেন কর্মচারীরা। সপ্তাহ ধরে আমার ভাতিজার জন্মনিবন্ধন করার জন্যে পৌরসভায় যাচ্ছি। তালা বন্ধ থাকায় খালি হাতে ফিরে আসছি। এভাবে চলতে থাকলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে বৈকি কমবে না। বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কালি কৃষ্ণ পাল বলেন, আমরা পৌরসভার নাগরিকদের সেবা প্রদানে দিনরাত আন্তরিকভাবে কাজ করি। কিন্তু আমরা বেতনভাতা নিয়মিত পাইনা। ২ মাস থেকে ৬২ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া আছে অনেক পৌরসভার কর্মচারীর। সারাজীবন নাগরিক সেবা প্রদান করলেও কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নেই। সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি আমরা। রাজস্বখাত থেকে বেতনভাতাসহ সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসলেও আমাদের দাবিকে আমলে নিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ। এখন আমাদের দেয়ালে পিঠ টেকে গেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাবো। প্রয়োজনে আমরন অনশন কর্মসূচি পালন করবো। তবে আন্দোলনের জন্যে ঢাকায় অবস্থান করায় পৌরসভার সকল নাগরিক সেবা বন্ধ থাকায় সকল পৌরসভার নাগরিকদের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করেন এই নেতা।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৮৪ বার