দাফনের তিনদিন পর থানায় হত্যার অভিযোগ
সিলেটের বিশ্বনাথে আয়ফুল বেগম (৫৫) নামের এক নারীকে দাফনের তিনদিন পর হত্যার অভিযোগ করেছেন তার মেয়ে নাসিমা বেগম (৩০)। গত ৪ আগস্ট রোববার রাতে জানাজার নামাজ শেষে আয়ফুল বেগমের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানা যায়, আগেরদিন শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার দোহাল গ্রামের মৃত রিফাত উল্লাহর মেয়ে। তার স্বামী ফজর আলী নিখোঁজের পর তিনি দীর্ঘদিন থেকেই বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্বনাথ থানায় তার বড়মেয়ে জানাইয়া গ্রামের নাসিমা বেগম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনা তদন্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নাসিমার অভিযোগ, নুর উদ্দিন (৩৫) নামের মামাতো বোন রেসনার স্বামী তার মাকে দেখাশুনা করতেন। গত ৩ আগস্ট শনিবার রাতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার পর তার মায়ের কাছে থাকা নগদ একলাখ টাকাও চুরি করেছেন নুর উদ্দিন। তবে, মামলায় নুর উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করা হলেও এ ঘটনায় নাসিমার দুই মামাকেও আটক করেছে থানা পুলিশ। এরা হলেন, মখলিছ আলী (৬০) ও ইলিয়াস আলী (৪২)। তবে, নাসিমার দাবি তিনি শুধুমাত্র নুর উদ্দিনকেই মামলায় অভিযুক্ত করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে আয়ফুল বেগমের প্রথম বিয়ে হয় বিশ্বনাথের জানাইয়া গ্রামের আব্দুল খালিকের সঙ্গে। তার পর আব্দুশ শহীদ (২৮) ও নাসিমা বেগমের ( ৩০)। জন্ম হয়। আব্দুশ শহীদ বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। আর নাসিমা বেগমকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে উপজেলার ছোটখুরমা গ্রামের আরশ আলীর কাছে। অন্যদিকে প্রথম স্বামী আব্দুল খালিক মারা যাবার পর আয়ফুল বেগমের ২য় বিয়ে হয় ছাতকের ভাওয়াল গ্রামের ফজর আলীর সঙ্গে। এরপর লিলু মিয়া নামের এক ছেলে ও কলসুমা নামের এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। পরবর্তীতে স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি বাবার বাড়ি দোহালেই বসবাস করছেন। আর তার দেখাশুনা করেন আয়ফুলের ছোটভাই মকবুল হোসেনের বড়মেয়ে রেসনা বেগমের স্বামী নুর উদ্দিন। গত ২৮ জুলাই রোববার ঘর নির্মাণের জন্য ভাইজির স্বামী নুর উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যুরো বাংলাদেশ বিশ্বনাথ শাখা থেকে নগদ এক লাখ টাকা লোন নেন আয়ফুল বেগম। এর ৪দিনের মাথায় গত ৩ আগস্ট শনিবার রাতে ঘুমের মধ্যেই মারা যান তিনি। আর সেই সাথে নগদ এক লাখ টাকাও উদাও হয়ে যায়। তিন জনকে আটকের সত্যতা জানিয়েছেন বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা বলেন, নুর উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের কিছুটা সত্যতা মিলেছে। সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।