জামায়াত আমিরের নাতনি শ্রমিক লীগের নেত্রী
বার্তা ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হাসিনা রহমান সিমুকে নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সিমু আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও তার নানা বন্দর থানা জামায়াতের আমির। ফলে সিমুকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক আলোচনা চলছে। রাজনীতির পাশাপাশি একাধিক সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত সিমু। প্রতিষ্ঠা করেছেন অটিজম শিশুদের জন্য একটি স্কুল। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘সিমু আনন্দধাম বৃদ্ধাশ্রম’। হঠাৎ করে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে আলোচনা আসেন সিমু। জামায়াত আমিরের নাতি হওয়ায় তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
সম্প্রতি একাধিক গণমাধ্যমে তার বৃদ্ধাশ্রমের নামে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অনুসন্ধানে হাসিনা রহমান সিমু সম্পর্কে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও সিমুন নানা জামায়াত নেতা। তার নানা জাফর সাদেক ভূইয়া ছিলেন বন্দর থানা জামায়াতের আমির। নানার পরিচয় গোপন রেখে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন সিমু। বর্তমানে জেলা শ্রমিক লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনি। বছর খানেক আগে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যুদ্ধাপরাধী কিংবা জামায়াতের ইসলামীর কেউ যেন তাদের দলে যোগ দিতে না পারে। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন কোনো নেতার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী লীগের যোগদানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার এসব সুবিধাবাদীর সম্পর্কে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি-জামায়াত থেকে কাউকে দলে নিতে নিষেধও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে মারা যান বন্দরের কদম রসূল এলাকার জাফর সাদেক ভূইয়া। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বাড়িতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের নিয়মিত বৈঠক হতো। এদিকে, জামায়াত নেতার নাতনি হয়েও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন হাসিনা রহমান সিমু। জেলা শ্রমিক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদকের পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তারা সপরিবারে থাকেন নানার বাড়িতে। স্থানীয় সূত্র জানায়, সামাজিক সংগঠন আনন্দধামের নির্বাহী চেয়ারম্যান হাসিনা রহমান সিমু। হাসিনা অটিজম চাইল্ড কেয়ার নামে একটি স্কুল চালান তিনি। মূলত সমাজসেবী হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তার পরিচয়। আওয়ামী লীগের জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে সখ্যতার কারণে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকেন তিনি। গত রমজানে প্রধানমন্ত্রীর ইফতার পার্টিতেও দেখা গেছে তাকে।
চার বছর আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন সিমু। কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের হাত ধরে শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। গত বছরের ১৫ জানুয়ারি জেলা শ্রমিক লীগের নতুন কমিটিতে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন। এই কমিটির সভাপতি কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুল। জাফর সাদেক ভূইয়া জামায়াত নেতা ছিলেন বিষয়টি স্বীকার করে জেলা ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ বলেন, জাফর সাদেক জামায়াত নেতা ছিলেন এটা সঠিক। আমি যদি মুক্তিযোদ্ধা হই কিন্তু আমার বাপে যদি রাজাকার হয় সেক্ষেত্রে তো তুল না দিলে চলবে না। নানা জামায়াতের নেতা ছিলেন বিষয়টি স্বীকার করলেও এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি হাসিনা রহমান সিমু।