সিলেটঃ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে শহরবাসী
দুপুর থেকে শুরু হওয়া মুশলধারের বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন ও সড়ক সংস্কারের কাজ চলায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই থেমে থেমে চলতে থাকে বৃষ্টি। কিন্তু দুপুর হওয়ার সাথে সাথে মুশলধারে বৃষ্টি শুরু হয় নগরীতে। যা সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। সন্ধ্যার পরও বৃষ্টি চলছে থেমে থেমে। বৃষ্টিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে সড়কে লন্ডনিরোড থেকে মদিনা মার্কেট এলাকা একেবারে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পানিতে ডুবে যায় সড়ক। এছাড়াও সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়া, জামতলা, চৌহাট্টার সড়ক ও জনপদ অফিসের সামনে, জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক, ছড়ারপাড়, পুরানলেন, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, কলাপাড়া, ভাতালিয়া, উপশহরসহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার বিকালে সরজমিনে দেখা যায়, সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে লন্ডনীরোড এলাকায় জলাবদ্ধতার ফলে সুবিদবাজার থেকে মদিনা মার্কেট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় সড়কের উভয় পাশে প্রায় দুশতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এছাড়াও বৃষ্টিতে লন্ডনীরোডে জলাবদ্ধতায় পরে ইঞ্জিনে পানি ঢুকে গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরবাইক পথিমধ্যে বিকল হয়ে পড়ে। এসব দেখে অনেক চালক সিএনজি অটোরিকশা নষ্ট হবার ভয়ে লাভলী রোড মোড়ে এসে গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়। এসব কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এসময় অনেক যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে বিকল সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দিয়ে চালকদের সাহায্য করেন।
সিএনজি চালক মো. রহমত আলী বলেন, প্রায় ১০ বছর যাবত সিএনজি চালাই। প্রতি বছরই বৃষ্টির সময় এই রাস্তায় জলাবদ্ধতা। সারা শহরের কোথাও জলাবদ্ধতা না থাকলে এখনে থাকে। বৃষ্টির দিনে এই রোডটা আমাদের জন্য ভয়ানক হয়ে উঠে। কারণ সিএনজি নিয়ে গেলেই ইঞ্জিনে পানি ডুকে নষ্ট হয়ে যায়। আরেক চালক সজিব মিয়া লাভলীরোডের মোড়ে এসে সিএনজি ঘুরিয়ে নেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দিন আনি দিন খাই। এখন ই রাস্তা দি গেলেই গাড়িটা নষ্ট হই যাইব। নষ্ট হলেই অনেক টাকা লাগবো ইঞ্জিনও কাজ করাইতে। তার উপর দুইদিন গাড়ি চালাতে পারতাম না। তাই গাড়ি ঘুরাইয়া নিছি। জলাবদ্ধতায় সড়কের গর্তে পরে গাড়ির চাকা ভেঙ্গে যায় রিকশা চালক আম্বর আলীর। তিনি বলেন,‘সারা দিনে রুজি হইছে না একশ টাকা কিন্তু গাড়ির চাক্কা ভাইঙ্গা দুইশ টাকা গলাত দণ্ডি লাগছে।’ লন্ডণী রোড এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মন্নান আহমদ বলেন, ১৯৯৪ সালে আমরা যখন আমরা পাঠানটুলা স্কুলে অধ্যয়নরত ছিলাম তখনও বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হতো। ওই সময় এই পানিতে খেলা করে খুশি মনে বাসায় গেলেও এখন আর এই জলাবদ্ধতায় খুশি হতে পারি না। এভাবে আর কতদিন চলবে। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীলদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, এই সড়কে জলাবদ্ধতা ভোগান্তি দীর্ঘ দিনের। এই সড়কের ড্রেন বড় করার জন্য ৬ মাস আগে কাজ ধরা হয়েছে। লন্ডনীরোডের মুখ থেকে মদিনা মার্কেট হয়ে ধোপাচড়া পর্যন্ত যাবে এই ড্রেন। আশা করছি এই ড্রেনের কাজ শেষ হলে এই সড়কে আর জলাবদ্ধতা হবে না।