এমপি রতনের বিরুদ্ধে আ.লীগে নেতা মুরাদের মন্তব্যে এলাকায় উত্তেজনা
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় আপত্তিকর বক্তব্য রাখায় ধর্মপাশায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই উত্তেজনার আঁচ লেগেছে আসনের অন্য দুই উপজেলা তাহিরপুর ও জামালগঞ্জেও। গত ১ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সামনে আপত্তিকর বক্তব্য দেন ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ মুরাদ। মুরাদ এমপি রতনকে নানা আপত্তিকর বিশেষণ দিয়ে বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মুরাদের দেওয়া বক্তব্যের বিরোধিতা করে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রতন অনুসারী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শামীম আহমদ মুরাদসহ এমপি রতনের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনাকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একহাত নিচ্ছেন তারা। এ নিয়ে ধর্মপাশাসহ আসনজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রতন অনুসারী নেতাকর্মীরা নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে মুরাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল-মিটিং করছেন। রতনের বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে, উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তারা।
গত ৬ অক্টোবর ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শামীম আহমদ মুরাদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। এই ঘোষণায় শামীম আহমদ মুরাদের সমর্থকসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করলে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে দুই পক্ষই কর্মসূচি থেকে নিবৃত্ত থাকে। রতনের অনুসারীরা নির্বাচনী এলাকার তাহিরপুর, মধ্যনগরসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। মুরাদের বক্তব্যকে ষড়যন্ত্রমূলক ও অসত্য বলে আখ্যায়িত করে বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছেন নেতারা। এদিকে প্রতিদিনই সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের পক্ষে তার সমর্থকরা শামীম আহমদ মুরাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সমালোচনা করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ মুরাদ গত ৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের লোকজন তাকে হুমকি-ধমকিসহ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও নোংরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন বলে অভিযোগ আনেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, আমরা এমপি মহোদয়কে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বসে তাদের কথা-বার্তা শোনার অনুরোধ করেছি। কারণ নির্বাচনী এলাকার দলের নেতাকর্মীদের মাঝে যদি ক্ষোভ থাকে সেটা প্রশমিত করা প্রয়োজন। সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম বলেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এই উত্তেজনায় পারদ যোগাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা নব্য আওয়ামী লীগাররা। তারা আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে। আমাদেরকে শান্ত থাকতে হবে।