আহসান হায়দার শুভ-

 কাউয়া (ভূঁইফোড়) সংগঠনের লাগাম টানতে পারছে না আওয়ামী লীগ। বরং ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এসব সংগঠনের সংখ্যা। পেছনে ‘লীগ’ শব্দ ব্যবহার ছাড়াও আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, শেখ রাসেল, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ বিভিন্ন নামে শতাধিক ভূঁইফোড় সংগঠন গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের অনুমোদন না থাকলেও এসব সংগঠনের নেতারা আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে বিভিন্ন দফতরে অনৈতিক সুবিধা আদায় ও নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি করে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘আওয়ামী’, ‘লীগ’, ‘নৌকা’ ও ‘ডিজিটাল’ শব্দ ব্যবহার করে গড়ে তোলা সংগঠনগুলো হচ্ছে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, আওয়ামী তরুণ লীগ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ, আওয়ামী লীগ সমর্থক, আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, আওয়ামী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ, আওয়ামী হকার্স লীগ, আওয়ামী যুব হকার্স লীগ, আওয়ামী ছিন্নমূল হকার্স লীগ, আওয়ামী সমবায় লীগ, আওয়ামী শিশু যুব সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী পরিবহন শ্রমিক লীগ, আওয়ামী তৃণমূল লীগ, আওয়ামী যুব স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী শিশু-কিশোর লীগ, আওয়ামী অভিভাবক লীগ, আওয়ামী কর্মজীবী লীগ, আওয়ামী প্রচার লীগ, আওয়ামী প্রচার ও প্রকাশনা লীগ, আওয়ামী পর্যটন লীগ, আওয়ামী নবীন লীগ, আওয়ামী স্বাধীনতা লীগ, আওয়ামী বাস্তুহারা লীগ, আওয়ামী ইয়াং বাংলা লীগ, আওয়ামী সৈনিক প্লাটুন, মুক্তিযোদ্ধা লীগ, মুক্তিযোদ্ধা তরুণ লীগ, মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, তরীকত লীগ, চলচ্চিত্র লীগ, মত্স্যজীবী লীগ, ছিন্নমূল মত্স্যজীবী লীগ, ক্ষুদ্র মত্স্যজীবী লীগ, রিকশা মালিক লীগ, রিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগ, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মচারী লীগ, দেশীয় চিকিত্সক লীগ, নৌকার মাঝি শ্রমিক লীগ, ঘাট শ্রমিক লীগ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লীগ, নৌকা প্রজন্ম, নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী, নৌকার নতুন প্রজন্ম, ডিজিটাল আওয়ামী লীগ, ডিজিটাল আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, ডিজিটাল আওয়ামী ওলামা লীগ, ডিজিটাল ছাত্রলীগ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ প্রভৃতি।

বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম ব্যবহার করে গড়ে তোলা সংগঠনগুলো হলো, বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাস্তবায়ন সংসদ, বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাস্তবায়ন লীগ, বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আদর্শ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমি, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ, বঙ্গবন্ধু জাতীয় লেখক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু বাস্তুহারা লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী হকার্স ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, বঙ্গবন্ধু জয় বাংলা লীগ, বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, চেতনায় মুজিব, আমরা মুজিব সেনা, বঙ্গমাতা পরিষদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, জননেত্রীর সৈনিক, জননেত্রী পরিষদ, দেশরত্ন পরিষদ, রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমি, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, শেখ রাসেল শিশু পরিষদ, সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদ প্রভৃতি।

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নাম নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ সমাজকল্যাণ যুব সংঘ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণমুক্তি আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদ, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী, স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি প্রতিরোধ কমিটি, প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সংস্থা, আমরা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম, স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সক পরিষদ, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ প্রভৃতি। আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্রের ২৫ (১) ধারা অনুযায়ী, সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা পাচ্ছে মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, তাঁতী লীগ এবং যুব মহিলা লীগ। আর নিজেদের গঠনতন্ত্র অনুসরণের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে জাতীয় শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগ। অর্থাৎ এই ৯টি সংগঠনের বাইরে আওয়ামী লীগ ঘরাণার রাজনীতিতে কোনো সংগঠন নেই।

লেখক:  সাবেক সহ সভাপতি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn