আরিফসহ বিএনপির ৪ নেতাকে আ.লীগে যোগ দেয়ার পরামর্শ
বিএনপির চার কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে বিষোদাগার ছুঁড়লেন সিলেট মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর। এই চারজন আওয়ামীলীগের পারপাস সার্ভ করেন অভিযোগ করে জিল্লুর তাদেরকে আওয়ামীলীগে চলে যেতে বলেন। বৃহস্পতিবার বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করে সিলেট মহানগর বিএনপি। সম্প্রতি সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি আসার পর পদত্যাগ করতে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সহক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক ও সহ সমাজসেবা সম্পাদক এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। কিন্তূ তাদের এ পদত্যাগ ছিল একটি নাটক। যা সিলেট বিএনপিতে এ পদত্যাগ নিয়ে নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। তাদের চারজন দল থেকে কেন পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তার বিষদ বর্ণনা দিয়ে জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর সিলেট বিএনপিতে বেশ আলোচনার জন্ম দেন। যা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়। জিল্লুর তার বক্তব্যের প্রথমেই কেন তারা পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, তাদের অনেক বাণিজ্য আছে। এরপর তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জামানকে নিয়ে সমালোচনা শুরু করেন। তিনি বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনের সময় জামান তার নেতাকর্মীকে মিটিং করে আওয়ামীলীগের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ২০১৮ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে আমেরিকায় চলে যান। তিনি সিলেট ২ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ভায়রা উল্লেখ করে জিল্লুর বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন মামলা নিয়ে বাসা বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি। কিন্তু ডা. শাহরিয়ার তাঁর ভায়রা আওয়ামীলীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদের কাছ থেকে আগেভাগেই খবর পেয়ে চামড়া বাঁচাতে আমেরিকায় চলে গেলেন। এরপর বিরূপ মন্তব্য করেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে নিয়ে।এসময় জিল্লুরের বক্তব্যের সাথে একাত্মতা করে মুহুর্মুহু স্লোগান তুলেন নেতাকর্মীরা। জিল্লুর বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জেল জুলুম তোয়াক্ষা করে নেতাকর্মীরা আরিফের নির্বাচনী কাজে অংশ নেয়। আমার নিজের বিরুদ্যেও একটি মামলা হয় উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা ব্যক্তিগতভাবে আরিফের কাছ থেকে কিছু আশা করিনি। কিন্তু বিএনপি আরিফের কাছ থেকে কিছু পায়নি। যুবদলের কমিটি আসার পর পদত্যাগ করতে বেশ উৎসাহী ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আসল মুক্তিযোদ্ধা কিনা প্রশ্ন ছুঁড়েন সিলেট বিএনপির সহসভাপতি জিল্লুর। তিনি আরো বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনে সিলেটের কোথাও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রাজ্জাক ধানের শিষের প্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য রাখেননি। তাদেরকে আওয়ামীলীগে চলে যাওয়ার আহাবান জানিয়ে আরো বলেন, দলের ছত্রছায়ায় থেকে এই চারজন আওয়ামীলীগের পারপাস সার্ভ করেন। তাই দলের ভেতরে না থেকে তাদেরকে আওয়ামীলীগে চলে যেতে বলেন। ষড়যন্ত্রকারীদের লাথি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য ত্যাগী নেতাকর্মীদের কাজ করার আহাবন জানান তাঁর বক্তব্যে।
সিলেট যুবদলের নতুন কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯ বছর পর কমিটি হয়েছে। যারা কমিটিতে এসেছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের ধন্যবাদ জানান জিল্লুর। তিনি বলেন, আন্দোলন করবে ছাত্রদল, যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল। কমিটি না হলে আন্দোলন কারা করবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই কমিটির মাধ্যমে দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া মামলা প্রত্যাহার এর জন্য সংগ্রাম করবে।