ঢাকার হোটেলে কুকুরের মাংসের কাচ্চি বিরিয়ানি!
ঢাকা: খোদ রাজধানীর হোটেল-রেস্টুরেন্টে বিক্রি হচ্ছে কুকুরের মাংসের কাচ্চি বিরিয়ানি। গেল কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে ওয়ালে ওয়ালে ঘুরে-ফিরছে এমন একটি স্ট্যাটাস! তাতে কুকুর জবাই করে মাংস বানানোর ছবিও যুক্ত আছে। এ নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় তোলপাড় চলছে। কুকুর বা শুকরের মাংস গরু-খাসি বলে বিক্রির ঘটনা নতুন নয়। কুকুর জবাই করে মাংস তৈরির কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তা দেখে ভোজনরসিকরা রীতিমত তাজ্জব বনে গেছেন! এতদিন তারা কি তাহলে খাসির কাচ্চির নামে গিলেছেন কুকুরের মাংস দিয়ে তৈরি ‘স্পেশাল কাচ্চি’! রাজধানী ঢাকার রাস্তায় মোড়ে মোড়ে এখন বিরিয়ানির দোকান। তুলনায় কম দামে পেট ভরে খেতে এসব দোকানে যান ভোজনরসিকরা। সাধ্যের মধ্যে গরু-খাসির বিরিয়ানির দাম ৯০ থেকে ১২০ টাকা। এই বিরিয়ানি নগরবাসীর প্রথম পছন্দের খাবার। তাই বিরিয়ানির ব্যবসাও রমরমা। কিন্তু, গরু-খাসির এই বিরিয়ানি এত কম দামে বিক্রি হয় কীভাবে! আসল ঘটনা জানলে আঁতকে উঠবেন। গরু-খাসির বিরিয়ানি বলে যা বিক্রি হচ্ছে, তা রান্না হয় কুকুরের মাংস দিয়ে।
সম্প্রতি অনুপ রনি নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কুকুর জবাই করে মাংস বানানোর ছবি সংযুক্ত করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ২৮ মার্চ দেয়া স্ট্যাটাসটি হাজার হাজার শেয়ার হয়েছে। তিনি লেখেন, ‘গরু-খাসির মাংসের বিরিয়ানি আজ থেকে হোটেলে খাওয়া বর্জন করুন। মাংস দিয়ে খেলে মুরগির মাংস খাবেন। আর সবচেয়ে ভালো, মাংস বাদ দিয়ে মাছ সবজি দিয়ে খাওয়া। কিছু অসাধু লোক কুকুর ধরে মাংস করে হোটেলে বিক্রি করছে। প্রতিটি কুকুরের মাংস বিক্রি হয় নগদ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
রাতে তিন-চারটি কুকুর ধরে মাংস বানিয়ে বিক্রি করলেই পকেটে আসে ১২ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু, আমরা হোটেলে কী খাচ্ছি। কখনোও কি ভেবেছি বা চিন্তা করি? মানুষ টাকার জন্য সব করতে পারে। দেখুন রাতে কুকুরের মাংস করার দৃশ্য ধরা পড়েছে মোবাইল ক্যামেরায়। মানুষের মনুষত্ব, সততা আজ বিলীন। বিলীন রুচিবোধ। আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি বাকরুদ্ধ। বাঙালি খাচ্ছে কি? নিচে দেয়া ছবি আপনার পরিবারকে দেখান। আর পরবর্তীতে এই বিরিয়ানি আর খাবেন কিনা ভাবুন!’ ভাইরাল হওয়া কুকুরের মাংসের স্ট্যাটাসের মন্তব্যে প্রায় সবাই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। গেল রমজানে রাজধানীর গুলশানের অলিভ গার্ডেন রেস্টুরেন্টে ইফতার সামগ্রীর সঙ্গে পাওয়া যায় শুকরের মাংস। মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) খাদ্যে ভেজাল বিরোধী অভিযানে ধরা পড়ে এ মাংস। এই চায়নিজ রেস্টুরেন্টে রমজান মাসে বিক্রির আয়োজন করা হয়েছিলো বাহারি ইফতারি। কিন্তু, বিএসটিআই-এর ওই অভিযানে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর তথ্য। ইফতারিতে শুকরের মাংস বিক্রির অভিযোগে ভোক্তা অধিকার আইনে রেস্টুরেন্টটিকে তখন দুই লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বছর ১৫ আগে আরিচা ঘাটের হোটেলেও বিক্রি হতো কুকুরের মাংস। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা যাত্রীদের কাছে এ মাংস বিক্রি করা হতো। গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় ওঠে। অবশেষে পুলিশ আরিচা ঘাটের আশপাশের কয়েকটি গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে জবাই করা কুকুর এবং কুকুরের মাংসসহ কয়েকজনকে আটক করে। পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলে পাঠালেও পরে তারা আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসে।