বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম- শেষ পর্যন্ত মসজিদ খুলে দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন। মসজিদ খোলার ঘোষণা শুনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে দুই দিনে ৮-১০ বার ফোন করেছি, কিন্তু পাইনি। তার পিএকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি তাঁকে জানাবেন বলে বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন কিনা জানি না। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আর কথা হয়নি। তাঁর সঙ্গে কথা হোক বা না হোক আমি জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া মসজিদ খুলে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। বলেছিলাম, একটা জাতীয় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করুন। কিন্তু এখনো হয়নি, আশা করি নিশ্চয়ই হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি, জাতীয়ভাবে না হয় না হলো, সরকারিভাবে আপনি আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার একটা আয়োজন করুন। ক্ষমাপ্রার্থনাকারীকে আল্লাহ খুবই পছন্দ করেন। সেই দিল্লি থেকে দেখে আসছি, আপনার নামাজে কোনো ক্লান্তি নেই। নিশ্চয়ই দেশের জন্য আপনি দুই ফোঁটা চোখের পানি ফেললে আল্লাহ অবশ্যই দয়া করবেন। চিন্তা করে দেখবেন। সেদিন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ঈদে জৌলুস না করে অসহায়দের সাহায্য করুন।’ এই তো একজন রাজনীতিক মানুষের কথা। যদিও এখন রাজনীতিতে খুব একটা রাজনীতিক নেই, ব্যবসায়ী ও অন্যরা রাজনীতি দখল করে আছে। এই দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ওবায়দুল কাদেরের আহ্বান ভাবীকালে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের এক মহামূল্যবান অলঙ্কার হয়ে থাকবে।

আগামীকাল আমার বাবা মৌলভী মুহাম্মদ আবদুল আলী সিদ্দিকীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাবা ৯৩ বছর বয়সে অনেকটা শক্তসমর্থ অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেছেন। বাবার ডায়াবেটিস ছিল বহুদিন। হজে গিয়ে স্যান্ডেল হারিয়ে গরমে পা পুড়ে ছিলেন। মক্কায় পায়ে যে ফোসকা পড়ে ছিল তা আর কখনো ভালোভাবে সেরে ওঠেনি। সে ফোসকার সামান্য ঘা সব সময় ছিল। যেদিন তিনি মারা যান সেদিনও কোর্টে গিয়েছিলেন। তাঁর মক্কেলদের কাজকর্ম করেছিলেন। টাকাও পেয়েছিলেন ৩০-৪০ হাজার। উকিল হিসেবে তাঁর আয় ছিল হিংসে করার মতো। তার এক দিন আগে এসেছিলেন ঢাকায়। আমাকে সংসদ থেকে ডেকে এনেছিলেন। ঘরে ঢুকে বাবা-মাকে এক সোফায় পাশাপাশি দেখে আকুল হয়েছিলাম। ও রকম একই সোফায় পাশাপাশি বসা মা-বাবাকে খুব একটা বেশি দেখিনি। আমি এলে দুজনের মাঝে বসিয়েছিলেন। অনেক কথা হয়েছিল। যাওয়ার আগে বাথরুমে গিয়েছিলেন। প্রস্রাব করে উঠতে পারছিলেন না। আমাকে ডাকছিলেন, ‘বজ্র, বজ্র, উঠতে পারছি না।’ বাবাকে দুই হাতে তুলেছিলাম। মনে হচ্ছিল যে বাবার আঙ্গুল ধরে হেঁটেছি, যে বাবা কোলে নিয়ে ঘুরেছেন আজ তিনি প্রস্রাব করে উঠতে পারছেন না। আমারও তো এমন হবে। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়েছিলাম রাত দুইটা-আড়াইটায়। তখনই ছুটেছিলাম। হাসপাতালে গিয়ে বাবাকে পাইনি। বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। আকুরটাকুর পাড়ার বাড়িতে বাবার পায়ের কাছে বসে ছিলাম। লাশ ধোয়ানোর সময় ছাড়া পুরোটা সময় তাঁর পায়ের কাছেই ছিলাম। আমি যে স্কুলে পড়তাম সেই পিটিআই স্কুল মাঠে প্রথম জানাজা হয়। জানাজা পড়ায় ছোট ভাই বাবুল সিদ্দিকী। পাড়ার কোনো মানুষ বাদ ছিল না জানাজায় শরিক হতে। টাঙ্গাইল থেকে যে গাড়িতে বাবাকে নেওয়া হয়েছিল সেটা চালিয়েছিল যীশু। যে যীশুকে বাবাই গাড়ি চালাতে শিখিয়েছিলেন। কবরের আগে দ্বিতীয় জানাজা হয়েছিল গ্রামের বাড়ি ছাতিহাটিতে। সেখানেও প্রচুর লোক হয়েছিল। বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী একটু দেরিতে পৌঁছেছিলেন। বেলাল লন্ডনে, মুন্নু ছিল আমেরিকায়। মুরাদ নিহারকে নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে ছুটে এসেছিল। প্রিয় বোন রহিমা ও শুশুও ছিল। লাশ দাফন করে বড় ভাইয়ের সঙ্গে আজাদ চলে এসেছিল। দীপের মা, মাকে নিয়ে টাঙ্গাইলে ছিলেন। কেন যেন আমার ফিরতে মন চাচ্ছিল না। গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। পরদিন গোরস্থানের পাশে মসজিদে যখন ফজরের নামাজ আদায় করছিলাম তখন বুকটা বড় বেশি হু হু করছিল। দেখতে দেখতে কত বছর চলে গেল। যেভাবেই হোক ১৩ মে বুধবার বাবার কবরে যাব। সন্তানের দোয়া মা-বাবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ কথা দিয়েছেন, বাবা-মায়ের জন্য সন্তানের দোয়া তিনি কবুল করবেন। অন্যদিকে ১৬ মে শনিবার ফারাক্কা দিবস। ’৭৬ সালের এই দিনে হুজুর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কা অভিযান করেছিলেন। অনেকেই অনেক রকমভাবে অনেক কথা বলেন। আমি হুজুর মওলানা ভাসানীকে যেভাবে দেখেছি, চিনেছি, জেনেছি তাতে তাঁর মতো ক্ষুরধার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ খুব বেশি দেখিনি। ফারাক্কা অভিযানে ফারাক্কা ধসিয়ে দেওয়া যাবে, ভেঙে ফেলা যাবে এটা হুজুর মওলানা ভাসানী কখনো বিশ্বাস করতেন না। তবু তিনি এ অভিযান কেন করতে গিয়েছিলেন? তিনি এটা জানতেন, ফারাক্কা ধ্বংস করতে পারবেন না। কিন্তু তাঁর ওই অভিযান সারা পৃথিবীতে ফারাক্কা যে আমাদের জন্য এক মারাত্মক সমস্যা তা তুলে ধরতে পেরেছিলেন। ফারাক্কা নিয়ে কখনো ভারত আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করেনি। ’৭৫ সালের ২১ এপ্রিল ফারাক্কা চালু করা হয়েছিল পরীক্ষামূলকভাবে। সেই পরীক্ষাই চলছে। কোনো ফলাফল এখনো জানতে পারলাম না।

করোনার কারণে জাতীয় বিপর্যয় এখনো অনেকে পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারছেন না। যে যাই বলুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ ভালোভাবেই এতটা সময় পার করে এনেছেন। মাঝেমধ্যে ভাবী, চারপাশে এত অপদার্থ নিয়ে তিনি কী করে চলেন! এতসব ব্যর্থকে নিয়ে চলা মারাত্মক কঠিন। করোনা এসে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ডাকাত, পাপিয়া-মাফিয়া-ক্যাসিনো সব ঢাকা পড়ে গেছে। সবাই করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। প্রায় দুই মাস গণপরিবহন বন্ধ। শ্রমিকদের যে কী দুরবস্থা কল্পনা করা যায় না। প্রতিদিন প্রতি গাড়ি থেকে শত শত টাকা চাঁদা তোলা হতো। তাতে কত হাজার কোটি হওয়ার কথা। ক্যালকুলেটর ছাড়া হিসাব করা যাবে না। তার পরও ৫০-৬০ লাখ পরিবহন শ্রমিকের ঘরে খাবার নেই, শুধু হাহাকার আর হাহাকার। প্রায় ১ কোটি প্রবাসীর ঘর থাকত আলোকিত ঝলমলে। তাদের বউয়েরা ৬০-৭০ হাজার টাকার নিচে মোবাইল হাতে নিত না; এখন তাদের কী যে দুরবস্থা! চুলা জ্বলে কি জ্বলে না কেউ জানে না। এসব মোকাবিলা করতে হবে। সরকার যতটা সম্ভব রেশন কার্ড দিতে পারে। পাকিস্তান আমলে রেশন দোকান ছিল। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় বাজারের অর্ধেক দামে চাল-ডাল-নুন-তেল সবই পাওয়া যেত। সরকার একটু চেষ্টা করলেই আবার সারা দেশে রেশনের ব্যবস্থা করতে পারে। কার্ড থাকলে মানুষের হিসাব যেমন থাকবে, যার প্রয়োজন রেশন দোকান থেকে রেশন নেবে। যার প্রয়োজন হবে না, সে খোলা বাজার থেকে কিনবে। যত তাড়াতাড়ি দেশব্যাপী রেশনের ব্যবস্থা করা যাবে ততই মঙ্গল। যে যাই বলুন, খাদ্যের অভাবের জন্য এ পর্যন্ত খুব একটা দুর্ভিক্ষ হয়নি, দুর্ভিক্ষ হয়েছে বণ্টনের অব্যবস্থার জন্য। শুধু শহরে টিসিবি ট্রাকে ট্রাকে যে চাল-ডাল-আটা-ময়দা-চিনি সস্তা দরে বিক্রি করছে এটা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু উদ্যোগটা খুবই সীমিত। সকালে ঘাসের ওপর শিশির বিন্দুর চাইতেও কম। এটা গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। তাই এদিকটায় নজর দেওয়া দরকার।

আমরা ঘরে, মেয়েটা লন্ডনে। চিন্তার শেষ নেই। তার লেখাপড়াও পিছিয়ে গেছে। জুনের পরীক্ষা নাকি সেপ্টেম্বরে হবে। ভিসা এবং অর্থ পাঠানো নিয়ে সমস্যা, টিউশন ফি নিয়েও এক মারাত্মক জটিলতা- কী যে করি কোনো কূলকিনারা পাচ্ছি না। কী যে হবে ঠিক বুঝতে পারছি না। করোনা নিয়ে যখন যাকে পাই তার সঙ্গেই আলোচনার চেষ্টা করি। দেশবাসী জানেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ আমাদের খুবই প্রিয়। আমার স্ত্রী তাঁর পরামর্শ ছাড়া একটা ট্যাবলেটও মুখে তোলেন না। করোনা সংক্রমণের সময় তিনি সামাজিক মাধ্যমে যা বলছেন সবই হৃদয়কাড়া। আমার খুবই পছন্দ। করোনা নিয়ে এত ভাবনার কিছু নেই। পশ্চিমা দেশ ইউরোপে বেশি মরার কারণ ওরা তো পাকসাফ থাকে না, প্রস্রাব-পায়খানার পর টিস্যু ব্যবহার করে। ছয় মাসে গোসল করে একবার, বছরে দুবার। মুসলমানরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পাঁচবার অজু করে। আমরা বাঙালি বারবার গোসল করি। সাবান দিয়ে, শ্যাম্পু দিয়ে, না হয় খৈল দিয়ে যে যেভাবে পারেন গোসলের চেষ্টা করেন। তাই আমাদের আর ইউরোপিয়ানদের করোনার আক্রমণের চাপ একরকম হবে না। করোনার চিকিৎসা কী? কিছুই না। ঠিক তেমনি করোনা কী? সেটাও কিছু না। সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্ট-পেটের পীড়ায় অন্য সময় যেভাবে যতœ নিই, যা ওষুধপত্র তাতেই সেরে যায়। মূল কথা, শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। আমরা রোদে পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি, দিনরাত পরিশ্রম করি, আমাদের শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা ইউরোপ-আমেরিকার লোকদের চাইতে অনেক বেশি। এটাকে আরও চাঙ্গা করতে পারলে শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারলে করোনা জয় কোনো কঠিন কাজ নয়। করোনার ব্যাপারে সব থেকে মূল্যবান সংক্রমণ প্রতিরোধ করা। চিকিৎসার চাইতে সংক্রমণ ছড়ানো ফেরাতে পারলে সেটা হবে আমাদের সব থেকে বড় সফলতা। আমি অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহর সঙ্গে একমত। যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বারবার শুধু হাত নয়, হাত-পা-মুখ ধুয়ে পরিষ্কার থেকে করোনার আক্রমণ থেকে নিজেকে, পরিবারকে এবং দেশকে বাঁচানো সম্ভব। করোনা নিয়ে বিখ্যাত হেকিম ইউসুফ হারুন ভূইয়া ও ডা. আলমগীর মতির সঙ্গে কথা হয়েছে। যে যাই বলুন, মধু-হলুদ-আদা-কালিজিরা-জৈন-নিমপাতা-নিসিন্ধা- এর প্রতিটি মানুষের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কিছুদিন আগে শুনলাম, থানকুনির পাতা করোনায় খুব উপকারী, হতেও পারে। থানকুনি পাতা করোনায় উপকার না হোক অপকারী তো নয়। তুলসীপাতা যে কেউ সকাল-বিকাল মধুর সঙ্গে খেলে তার কফ-কাশি অবশ্যই কমবে। তাহলে এগুলো নিয়ে তর্ক করার কী আছে? আমাদের করোনাকে মোকাবিলা করতে হবে, শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে- এটা যা করে সম্ভব তাই করতে হবে। করোনার কাছে পরাজিত হলে চলবে না। আমরা যেভাবে প্রতিটি দুর্যোগে জয়ী হয়েছি, দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি সেভাবে করোনার সঙ্গেও লড়াইয়ে জয়ী হতে হবে। অনেকের হয়তো মনে নেই, মুক্তিযুদ্ধের সময় ঠিক করোনার মতো চোখের অসুখ হয়েছিল। ’৭১-এ চোখ ওঠেনি এমন খুব কম লোক ছিল। কাদেরিয়া বাহিনীতে আমার আর সহযোদ্ধা শামসুর চোখ ওঠেনি। তখন এ রোগের নাম হয়েছিল ‘জয় বাংলা’। চোখ ওঠাকে ‘জয় বাংলা’ রোগ বলা হতো। আমরা কিন্তু তাকেও মোকাবিলা করেছিলাম। তাই কোনো মহামারীকে মোকাবিলা করা যাবে না, তেমন নয়। অবশ্য অবশ্যই আমরা জয়ী হব।

গত পর্বে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ চ্যানেল আইয়ে একটি অনুষ্ঠান সম্পর্কে দুটি কথা লিখেছিলাম। অনুষ্ঠানটি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু উপস্থাপন করেন। চ্যানেল আইয়ের প্রাণপুরুষ সাগরকে সব সময় ছোট ভাইয়ের মতো দেখেছি। ধীরে ধীরে বিত্তশালী হয়েছে তাতে খুশিই হয়েছি। কিন্তু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে এতটা যা খুশি তা করবে, সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য- এটা খুব সহজভাবে মেনে নেওয়া যায় না। নাসির উদ্দিন বাচ্চুর ভূমিকা কোনো দিনই আওয়ামী লীগ বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে অথবা বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ ছিল না। ছিল বঙ্গবন্ধুবিদ্বেষী। স্বাভাবিক থাকলে আমার কিছুই বলার ছিল না। গত শুক্রবার নূহ-উল-আলম লেনিনকে এনেছিলেন। ইনিয়ে-বিনিয়ে কত কথা বললেন। কিন্তু পল্টনে তিনি যে বলেছিলেন, ‘এই যে তোফায়েল, তোগর বঙ্গবন্ধু চঙ্গবন্ধুকে টুকরা টুকরা করলাম’ বলে লিফলেট টুকরো টুকরো করেছিলেন তা বললেন না। আমার খারাপ লাগে, বঙ্গবন্ধুর নামের লিফলেট তিনি কীভাবে ছিঁড়েছিলেন সে মিটিংয়ে নিজের চোখে দেখেছিলাম। তার ষাঁড়ের গর্জন নিজের কানে শুনেছিলাম। আমি সব বামপন্থিকে খারাপ বলি না। তাঁদের অনেককেই ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, পশ্চিমবঙ্গের স্পিকার হাশিম আবদুল হালিমের ভাগ্নে হায়দার আকবর খান রনো, জনাব খালেকুজ্জামান, মনজুরুল আহসান- এরা আর লেনিনরা এক নন। মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেননরা এক নন। বঙ্গবন্ধুকে সীমার-এজিদ-ফেরাউন বলতে একসময় তাদের মুখে বাধেনি। এখন আবার ‘বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু’ বলে মুখে ফেনা তুলছেন। বড় খারাপ লাগে, নীতি-নৈতিকতার বড় অভাব। কেমন যেন সাধারণ মানুষও ইদানীং তেমন সত্য মিথ্যার বাচবিচার করে না। যে যা বলছে, কারও কোনো দায়দায়িত্ব নেই। মনে হয় কোনো কথা কারও খারাপ লাগে না, ভালো লাগে না। এটা কেন যে হলো, একদিন যে জাতির চেতনাবোধ ছিল মারাত্মক চনমনে, সে জাতি কেন এতটা ম্রিয়মাণ হয়ে গেল? যে যা খুশি বলছে, করছে কোনো জবাবদিহি নেই। আমরা তো কখনো এমন ছিলাম না। তাহলে কেন এমন হলাম? সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন। লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn