কমিটি নিয়ে অসন্তোষ, কেন্দ্রে সিলেট মহানগর আ.লীগের ‘বিকল্প কমিটি’
বার্তা ডেক্স :: সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা গত সোমবার কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। এদিন রাতে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির তালিকা জমা দেন মহানগরের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন। এ তালিকা জমা দেয়ার পরই সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। বিগত কমিটিতে থাকা এমন কয়েকজন নেতা এবারের কমিটিতে আশানরুপ পদ পাচ্ছেন না কিংবা বাদ পড়ছেন এমন সন্দেহে একত্র হন তারা। সিদ্ধান্ত নেন বিকল্প আরেকটি কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়ার। এমন সিদ্ধান্ত থেকে বুধবার সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে তারা বিকল্প একটি কমিটি জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিগত কমিটিতে সম্পাদকীয় পদে থাকা এক নেতা সিলেটভিউকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত ও কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নেতারা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করেন। ওবায়দুল কাদের তাদের সকল অভিযোগ লিখিত আকারে দলীয় কার্যালয়ে জমা দিতে বলেন। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে তাদের লিখিত অভিযোগ এবং বিকল্প একটি কমিটির তালিকা জমা দেন।
বিকল্প এই কমিটিতে প্রথম সহ সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ারকে এবং প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাখা হয়েছে সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জগদীশ দাসকে। জগদীশ দাস সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন ঢাকার সমাবেশে ছিলেন তিনি এবং জেলা যুবলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। সেদিন হামলা শেষে পুলিশের লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন তারা। কিন্তু এবারের কমিটিতে জগদীশকে রাখা হয়নি বলে দাবি বিকল্প কমিটি জমা দেয়া নেতাদের। তারা আরো দাবি করেন, মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দেয়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন আগের কমিটির সম্পাদক পদে থাকা এডভোকেট শামসুল ইসলাম, তপন মিত্র, প্রিন্স সদরুজ্জামানসহ অনেকেই। গত ৫ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হন এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক হন অধ্যাপক জাকির হোসেন।
কিন্তু মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান আর করোনা পরিস্থিতির কারণে আটকে যায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। তবে এক সপ্তাহ আগে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে সিলেটসহ পূর্ণাঙ্গ না হওয়া সকল ইউনিটের কমিটি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এমন নির্দেশনার পর কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ চার নেতা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কমিটি জমা দেন তারা।