ওয়েছ খছরু : সিলেটের কোটিপতি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ফেনুর বিরুদ্ধে ডিসির কাছে অভিযোগ করেছেন পেট্রোলপাম্প মালিক হেলাল উদ্দিন। তিনি ফেনুর কাছে পাওনা অর্থ ফেরত পেতে সাহায্য চেয়েছেন জেলা প্রশাসকের। এ ঘটনার পর ক্ষেপেছেন রফিকুল ইসলাম ফেনু। বলেছেন, তার কাছে টুকেরবাজারের পেট্রোলপাম্পের মালিক হেলাল কোনো টাকা পান না। উল্টো তিনি মাপে তেল কম দেয়ায় তিনি উল্টো টাকা পান। একই সঙ্গে সিলেটের পাম্প মালিকরা তার মালিকানাধীন প্রায় ১২০ টি ট্রাক ও পিকআপে ১০ দিন তেল না দেয়ায় তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। জেলা প্রশাসক তাকে ডাকলে তিনি ক্ষতিপূরণ চাইবেন বলে জানান। রফিকুল ইসলাম ফেনুর বাড়ি কাজলশাহ এলাকা। মার্চেন্ট হিসেবেই তিনি বহুল পরিচিত। বিপুল সংখ্যক যানবাহনের মালিক ছাড়াও তিনি রড, সিমেন্টের সিলেট শহরের বড় ব্যবসায়ী। আর হেলাল উদ্দিন একজন মৎস্য আড়ৎদার। সিলেটের টুকেরবাজারের তেমুখী পয়েন্টে রয়েছে সফাত উল্লাহ ফিলিং স্টেশন নামের একটি পেট্রোলপাম্প। সম্প্রতি হেলালের সঙ্গে রফিকুল ইসলাম ফেনুর দ্বন্দ্বে সিলেটের ব্যবসায়ী মহলে তোলপাড় চলছে। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে জেলা প্রশাসকের টেবিল পর্যন্ত। জেলা প্রশাসক সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাহেদুল করীমকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে- আগামী ১১ই এপ্রিল জেলা প্রশাসনে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হবে। বুধবার জেলা প্রশাসকের কাছে ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের পক্ষ নিয়ে আবেদন করেছেন সিলেট পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতারা। আবেদনের তারা বলেছেন, তেমুখী পয়েন্ট অবস্থিত মেসার্স সফাত উল্লাহ ফিলিং স্টেশন থেকে রফিকুল ইসলাম ফেনুর ১২০টি গাড়ির জন্য ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মাসিক চুক্তিতে নিয়মিত জ্বালানি সংগ্রহ করতেন। ফেনু প্রতিমাসে বিল পরিশোধ করলেও চলতি বছর জানুয়ারি থেকে হঠাৎ বিল প্রদান বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে তার কাছে হেলাল উদ্দিনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯৪ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এদিকে- অভিযোগ তোলায় ক্ষেপেছেন কোটিপতি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ফেনু। তিনি জানিয়েছেন- হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে তিনি ব্যবসা করেন না। দেশের শীর্ষ স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তার ব্যবসা। কিন্তু দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে তিনি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউ কোনোদিন তার বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলার সাহস পাননি। হেলাল উদ্দিন নিজের অসৎ ব্যবসা ঢাকতে তিনি উল্টো মিথ্যা অভিযোগ করছেন। গতকাল সংবাদপত্রে প্রেরিত এক পত্রে রফিকুল ইসলাম ফেনু উল্লেখ করেন- শহরতলীর টুকেরবাজারস্থ মেসার্স সফাত উল্লাহ ফিলিং স্টেশন থেকে তার মালিকানাধীন গাড়ির তেল সংগ্রহ করা হয়। তেল সংগ্রহ করার পর এই তেল দিয়ে ট্রাকসমূহ যত কিলোমিটার চলাচল করার কথা তত কিলোমিটার চলাচল না করায় সন্দেহ হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তারা জানায়, পেট্রোল পাম্প থেকে   তেল কম দেয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে। বিষয়টি সফাত উল্লাহ সিএনজি পাম্পের মালিক হেলাল উদ্দিনকে জানানো হয়। একই সঙ্গে ফেনুর তরফ থেকে বলা হয়, ‘এভাবে গাড়িতে তেল কম দিতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হবে। ফেনু জানান, ‘একপর্যায়ে আমি হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে হিসাব নিকাশ শেষ করে তার পাম্প থেকে  তেল ক্রয় বন্ধ করে দেই। এতে সে ক্ষিপ্ত হয় এবং আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে থাকে এক পর্যায়ে হেলাল উদ্দিন সিলেট পেট্রোলিয়াম ওনার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও সেক্রেটারিকে ম্যানেজ করে আমার প্রতিপক্ষ বানানোর পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। সিলেট পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন এর সঙ্গে আমার  কোন বিরোধ নেই এবং কখনও ছিল না। সমিতির  নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে হেলাল উদ্দিন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘আমার কাছে  হেলাল উদ্দিনের কোন পাওনা নেই বরং আমি এ পর্যন্ত  হেলাল উদ্দিনের পাম্প থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার  তেল কম পেয়েছি। যে কারণে আমি ব্যবসায়িকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn