তিন্নির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
বার্তা ডেক্সঃঃঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করা উলফাত আরা তিন্নির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (২ অক্টোবর) রাতে নিহত তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত উলফাত আরা তিন্নি উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর মেয়ে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) রাতে বড় বোন মিন্নির সাবেক স্বামী একই গ্রামের কনুর উদ্দিনের ছেলে জামিরুল তিন্নিদের বাড়িতে দুই দফা প্রবেশ করে হামলা-ভাঙচুর ও তিন্নির ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এরপর রাত ১২টার দিকে শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় তিন্নির মরদেহ উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা।
তিন্নির খালাতো ভাই মখলেসুর রহমান জানান, তাদের বাড়ি ছিল একই উপজেলার যুগিপাড়া গ্রামে। পরে তার বাবা শেখপাড়া বাজারের পাশে বাড়ি করেন। তিন্নির মেঝ বোন মুন্নীর সাথে বিয়ে হয় শেখপাড়ার জামিরুল ইসলামের সাথে। বিয়ের পর জামিরুল ঘর জামাই থাকতেন। গত বছর মুন্নীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। মুন্নী পরে বিয়ে করে বাবার বাড়িতেই থাকেন। বিচ্ছেদের পর আবারো স্ত্রীকে নিয়ে যেতে প্রায়ই চাপ দিয়ে আসছিল মুন্নীর প্রাক্তণ স্বামী জামিরুল। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে জামিরুল লোকজন নিয়ে আবারো বাড়িতে আসে। এসময় তারা ঘরে ভাংচুর করে। এসময় তিন্নি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ছিল। ভাংচুরের সময় বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে জামিরুল ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর তিন্নির কোন সাড়া না পেয়ে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে তার রুম ভেতর থেকে লাগানো দেখে দরজা ভেঙ্গে তারা ভেতরে ঢুকে তিন্নিকে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
তিন্নীর মা হালিমা বেগম অভিযোগ করেন বলেন, আমার মেয়ে খুবই মেধাবী। বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিল। ঘটনার দিন সে সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া থেকে এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জামিরুলের হুমকির শিকার হয় তিন্নি। আমাদের সন্দেহ তিন্নি পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে লজ্জা ও ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। শৈলকুপা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মহসিন হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পড়ালেখা শেষ করা মেধাবী ছাত্রী তিন্নির মৃত্যুতে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের নামে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে শেখপাড়া গ্রামের কনুর উদ্দিনের ছেলে আমিরুল, খলিল শেখের ছেলে নাইম ও লাবিবসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলার প্রধান আসামি জামিরুল এখনও পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।-পূর্বপশ্চিমবিডি